শিট মাস্কের নাম শোনেননি? তা হলে আপনার রূপরুটিনটাকে এক্ষুনি আধুনিক করে তোলা প্রয়োজন। যাঁদের ত্বক ক্রমশ শুষ্ক হয়ে আসছে, বলিরেখা পড়ছে, দূষণের জ্বালায় জেরবার অবস্থা, তাঁদের ত্বকে লাবণ্য ফিরিয়ে আনতে শিট মাস্কের জুড়ি নেই!
আপনি কি কখনও কোরিয়া, বিশেষ করে দক্ষিণ কোরিয়ার মানুষের ত্বকের প্রকৃতি লক্ষ করে দেখেছেন? এঁরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ত্বকের যত্ন নেন এবং গোটা দুনিয়ায় মোমে মাজা ঝকঝকে ত্বকের জন্য সুবিখ্যাত। কোরিয়ার নানা বিউটি ট্রিক নিয়েও প্রবল আগ্রহ তৈরি হয়েছে। শিট মাস্ক তারই অন্যতম।
একটি মাইক্রোফাইবার বা খুব নরম সুতির জীবাণুমুক্ত কাপড় কোনও সিরাম বা হাইড্রো জেলে চুবিয়ে নিয়ে প্যাকেটবন্দি করা হয়। ত্বকের প্রকৃতি অনুযায়ী শিট মাস্ক বেছে নিন, তারপর মুখ পরিষ্কার করে নিয়ে তা ব্যবহার করুন। শিট মাস্ক ত্বকের উপর চাপিয়ে রাখলেই হবে – মিনিট কুড়ির মধ্যে প্রয়োজনীয় সব গুণ শুষে নিয়ে ত্বক হয়ে উঠবে একেবারে ঝলমলে উজ্জ্বল।
যাঁদের ত্বক প্রাকৃতিকভাবে শুষ্ক বা নিয়মিত মেকআপ ব্যবহার বা অযত্নের কারণে আর্দ্রতা হারিয়েছে, তাঁদের যদি ফেশিয়াল বা অন্য কোনও বিউটি ট্রিটমেন্ট করানোর সময় না থাকে, তা হলে সপ্তাহে বার দুয়েক শিট মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। সিরাম বা হাইড্রোজেল সরাসরি ত্বকের গভীরে প্রবেশ করবে এবং কম সময়েই ফারাক টের পাবেন।
সবচেয়ে বড়ো সুবিধে হচ্ছে, আজকাল অনলাইনে সহজেই শিট মাস্ক কিনে ফেলা সম্ভব। দামও খুব বেশি পড়ে না। তবে আগেই বলা হয়েছে, ত্বক ভালো করে পরিষ্কার করে নিয়ে তবে এই মাস্ক ব্যবহার করার কথা ভাববেন। তা না হলে কিন্তু ময়লা ও মৃত কোষের বাধা পেরিয়ে পোষণ ত্বকের গভীরে পৌঁছবে না।
শিট মাস্ক কিন্তু আপনার ময়েশ্চরাইজার বা ফেস প্যাকের বিকল্প নয়, এটা খেয়াল রাখবেন। ত্বকের লাবণ্য অক্ষুণ্ণ রাখতে হলে আপনাকে প্রচুর জল খেতে হবে, খাবারে খুব বেশি তেলমশলা থাকলে চলবে না, পেট পরিষ্কার রাখতে হবে। সেই সঙ্গে ব্যবহার করতে হবে সানস্ক্রিনও।
বাড়িতে শিট মাস্ক বানাতে চান? মানের দিক থেকে তা কতটা ভালো হবে, তার নিশ্চয়তা নেই। প্রথমে সুতির কিছু ফেসিয়াল মাস্ক শিট কিনে নিন (আজকাল অনলাইনেও কিনতে পাওয়া যায়)। তার পর বাছতে হবে ফেসিয়ালের উপাদান। চাল ধোওয়া জল, (অরগ্যানিক চাল হলে ভালো হয়, না হলে কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব এড়ানো মুশকিল। এটি কোরিয়ায় সবচেয়ে জনপ্রিয়), ঠান্ডা গ্রিন টি, শসার রস বা গোলাপ জল দিয়ে মাস্ক তৈরি করতে পারেন। তার মধ্যে পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নেওয়া যায়।
তরলটা ঠান্ডা করে নিয়ে সুতির শিটটা তার মধ্যে ডুবিয়ে রাখুন। আধ ঘণ্টা অন্তত ফ্রিজের মধ্যে এই শিটটি তরলে নিমজ্জিত অবস্থায় রাখতে হবে। তার পর বের করে মুখের উপর বিছিয়ে দিন। পুরো তরলটা ত্বকের শুষে নিতে আধ ঘণ্টামতো সময় লাগবে। তার পর মুখ ধুয়ে ময়েশ্চরাইজার লাগিয়ে নিলেই হবে!