রোজকার একঘেয়েমি দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় কী বলুন তো? ঘরে একগোছা ঝলমলে ফুলের উপস্থিতি! মেঘলা মনে হাসি ফোটানোই হোক বা বোরিং অফিস ডেস্ক নিমেষে রঙিন করে তোলাই হোক, ফুলের জয়জয়কার সর্বত্র! কিন্তু জানেন কি, ঘরের ভোল পালটে দেওয়া আর মন ভালো করা ছাড়াও ফুলের আরও নানা কাজ রয়েছে? এই যেমন, আপনার ত্বকের জৌলুস বাড়িয়ে তুলতেও নানা ধরনের ফুল একটা বড়ো ভূমিকা নিতে পারে? আর সেজন্যই সারা পৃথিবীর রূপচর্চার ইতিহাসে একটা বিশেষ স্থান চিরকালই ফুলের জন্য বরাদ্দ!
গোলাপের কথাই ধরা যাক! হাজার হাজার বছর ধরে রূপচর্চায় গোলাপের ব্যবহার হয়ে আসছে! গোলাপজল, গোলাপের গন্ধওলা সুগন্ধী, সব কিছুই দারুণ জনপ্রিয়। গোলাপের নির্যাস ত্বক আর্দ্র রাখে, ইনফ্লামেশন কমায়, ত্বকের পিএইচ ভারসাম্যও বজায় রাখতে সাহায্য করে। গোলাপের অ্যান্টিঅক্সিডান্ট আপনার ত্বক রাখে সজীব, বয়সের দাগছোপ পড়তে দেয় না। টোনার হিসেবে ব্যবহার করুন গোলাপজল।
জবার কথা আর নতুন করে কী বলার আছে! চুলের গোড়ায় পুষ্টি জোগাতে, খুসকি কমাতে জবাফুল বাটার ব্যবহার তো বহু পুরনো! শুধু চুলই নয়, মুখের গাঢ় কালো দাগ তুলতেও জবার নির্যাস মেশানো তেল ব্যবহার করেন অনেকে। জবার ভিটামিন সি ত্বকে কোলাজেন তৈরি করে, নতুন কোষের জন্ম দেয় আর ত্বক করে তোলে টানটান লাবণ্যময়!
রজনীগন্ধা পাওয়া যায় সারাবছর, আর তার মিষ্টি গন্ধের কোনও তুলনা নেই! একাধিক সুগন্ধিতে রজনীগন্ধার নির্যাস ব্যবহার করা হয়। এবার ত্বকের যত্নেও কাজে লাগান এই ফুল। ২০০ মিলি মতো রাইসব্র্যান অয়েল নিন, তাতে গোটা কুড়ি রজনীগন্ধা ফুল ভিজিয়ে এক সপ্তাহ রেখে দিন। তারপর ছেঁকে নিয়ে মাসাজ অয়েল হিসেবে ব্যবহার করুন। ত্বক তুলতুলে নরম হওয়ার পাশাপাশি সুগন্ধে ভরে উঠবে!
ত্বকের যত্নে জুঁইফুল গোলাপের মতোই কার্যকর! একাধিক অ্যাকটিভ কেমিক্যাল রয়েছে জুঁইফুলে যা ত্বকের পক্ষে ভীষণ উপকারী। জুঁইয়ে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডান্ট রয়েছে, তাই অ্যান্টিএজিং উপাদান হিসেবে দারুণ কার্যকর এই ছোট্ট সাদা ফুলটি! ত্বকের দাগছোপ, অসমান ত্বকের রং, এজস্পট, সমস্যা যাই হোক না কেন, বেছে নিন জুঁইফুলের নির্যাস আর দেখুন ত্বক কীভাবে হেসে ওঠে!
সামনেই আসছে গাঁদার মরশুম! অ্যান্টিসেপটিক হিসেবে গাঁদাপাতার ব্যবহার তো সকলেরই জানা, এবার ফুলটিও ব্যবহার করুন ত্বকের যত্নে! গাঁদার পাপড়ি বেটে মুখে মাখলে কালো দাগছোপ নির্মূল হবে সহজেই! মাস্কেও গাঁদার পাপড়ি বেটে মিশিয়ে নিতে পারেন। ত্বক উজ্জ্বল আর স্বচ্ছ হয়ে উঠবে অল্পদিনেই। বাচ্চাদের ন্যাপি র্যাশ সারাতে স্নানের জলে গাঁদার পাপড়ি ছড়িয়ে দিতে পারেন।