সূর্যের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি যেমন আমাদের বন্ধু, তেমনই আবার শত্রুও বটে। রোদে জামাকাপড়, কাঁথা-কম্বল রাখলে তা জীবাণুমুক্ত হয়। কারণ আল্ট্রা ভায়োলেট এ আর বি যৌথ আক্রমণে মেরে ফেলে সব জীবাণুকে। তাই ক’দিন বৃষ্টির পর রোদ উঠলেই আমরা জিনিসপত্র বের করে রোদ খাইয়ে নিই। রোদে জারানো আচার পুষ্টির দিক থেকে অসামান্য। তা দীর্ঘদিন ভালো থাকে।
কিন্তু পাশাপাশি আবার আল্ট্রা ভায়োলেট বি ত্বকের উপরের স্তর পুড়িয়ে দিতে পারে। ইউভিএ মেঘ, কুয়াশার চাদর ভেদ করতে পারে, কাচের দেওয়াল বা জানলা ফুঁড়ে ঢুকে আসে ঘরের ভিতরে। জামাকাপড় পরে থাকলে শরীর ঢাকা পড়ে বটে, কিন্তু খোলা থাকে মুখ, ঘাড়, গলা, কানের উপর। সর্বত্র ভালো করে সানস্ক্রিন লাগাতেই হবে – তা সে আপনি ঘরের ভিতরে থাকুন বা বাইরে।
সকালে-বিকেলে মিলিয়ে মিনিট ১৫-২০ গায়ে রোদ লাগানো যায়, বিশেষ করে যখন রোদের তেজ কম। তাতে ভিটামিন ডি সংশ্লেষ হয়, ভালো থাকে মনের স্বাস্থ্যও। কিন্তু বেলা বাড়লে সাবধান হোন, ব্যবহার করুন ব্রড স্পেকট্রাম সানস্ক্রিন – যা ইউভিএ এবং ইউভিবি দু’য়ের হাত থেকেই বাঁচাবে। এসপিএফ বা সান প্রোটেকশন ফ্যাক্টর যেন অন্তত ৩০-এর উপর হয় তা দেখে নেবেন। সুপন্ধি, কসমেটিক সানস্ক্রিনের চেয়ে মেডিকেটেড সানস্ক্রিন অনেক বেশি কাজের।
ত্বককে রোদের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত না রাখলে কী হতে পারে? ত্বক ক্রমশ শুকনো, রুক্ষ হয়ে পড়বে। রোদের তাপ যেভাবে ভেজা কাপড় থেকে সমস্ত আর্দ্রতা টেনে নেয়, ঠিক সেভাবেই আপনার ত্বকের প্রাকৃতিক তেল আর আর্দ্র কোমলতাও শুষে নেবে। ফলে আঁশের মতো শুকনো প্যাচ দেখতে পাবেন, সাদা বা কালো ছোপ পড়বে। ব্যাপারটা এখানেই শেষ হবে না কিন্তু – খুব শিগগির বলিরেখা পড়তে আরম্ভ করবে। ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা কমতে আরম্ভ করবে ক্রমশ।
হালকা সানবার্ন হলে ত্বকে একটা চিড়বিড়ানি টের পাবেন, ক্রমশ ত্বকের রঙে ফারাক দেখতে পাবেন। আমাদের জামার হাতা বা ঘড়ির ব্যান্ডের নিচে দেখলেই রঙের ফারাকটা বোঝা যায়। হাত, পা, কান, গলার খোলা অংশও বেশিক্ষণ রোদে থাকলে পুড়ে যেতে পারে। ছোটো ছোটো ব্রণর মতো অংশ দেখা যায়, অনেক সময় সেগুলি ফোসকার মতো বড়ো হয়ে যায়। সেই সঙ্গে থাকে স্কিন ক্যানসারের আতঙ্কও।
তাই শীত হোক বা গ্রীষ্ম, সারা বছরই সানস্ক্রিন, ক্যাপ, সানগ্লাস ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে। ত্বকের একবার ক্ষতি হয়ে গেলে কিন্তু তার মাশুল গুনতে হবে জীবনভর।