দামী শাড়ি বা শাল দেখলে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না, কিনে ফেলেন সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গে? কিন্তু আপাতত যা পরিস্থিতি, তাতে সেসব যে কবে পরার সুযোগ মিলবে তার কোনও ঠিক নেই।
কিন্তু দিনের পর দিন আলমারি বন্দি হয়ে থাকতে থাকতে আপনার পোশাকের স্বাস্থ্য ক্রমশ খারাপ হতে আরম্ভ করে। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও ঠিক যে সিল্ক, তসর, লিনেন বা সুতির মতো প্রাকৃতিক ফাইবারের শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজন হয়।
হয়তো কিছুদিন এভাবে থাকলে ফ্যাব্রিকের খুব একটা ক্ষতি হবে না। কিন্তু যেহেতু আমাদের সামনে অনেকগুলো অনিশ্চিত দিন পড়ে আছে, তাই কাপড়চোপড়ের যত্নের ব্যবস্থাটাও করা উচিত এখন থেকেই।
ফ্যাশন ডিজাইনার সন্দীপ সরকার বলছেন, “খেয়াল রাখবেন, পোশাকের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় বর্ষাকালের স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়ায়। সিন্থেটিক ফ্যাব্রিকের গায়ে ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস জন্মায় না। কিন্তু সিল্ক, সুতি বা তসর অনেকদিন নাড়াচাড়া না হয়ে পড়ে থাকলে তার তন্তুর গায়ে জীবাণু জন্মাবে।’’
সবচেয়ে তাড়াতাড়ি সিলভার ফিশ লাগে সিল্কের গায়ে, কারণ সিল্কের তন্তুর মধ্যে থাকে প্রাণিজ প্রোটিন, সেগুলি আবার ওই পোকার প্রিয় খাদ্য। তাই বর্ষা শুরুর আগে আর পরে জামাকাপড় রোদে দেওয়ার পরম্পরা আছে। রোদের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মি পোশাক জীবাণুমুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
আরও একটি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে – যে কোনও দামী পোশাকের ক্ষেত্রেই মাঝে মাঝে ভাঁজ বদলে দেওয়া দরকার। কারণ ভাঁজের মাঝে মাঝে ধুলো বাসা বাঁধে এবং সেই বরাবর ফ্যাব্রিক চিড় খেয়ে যায়।
তা হলে আপনার রুটিনটা ঠিক কেমন হবে? সময় সু্যোগ পেলেই পোশাক বের করে ফেলুন আলমারি থেকে। ভাঁজ খুলে ভালো করে ঝেড়ে নিন নরম কোনও ব্রাশ দিয়ে। তার পর রোদে রাখুন। রোদ থেকে তুলে ভাঁজ বদলান এবং একেবারে ঠান্ডা করে নিয়ে ফের আলমারিতে তুলুন। সেই সঙ্গে আলমারিতে রাখুন জীবাণুনাশক ওষুধপত্র। অনেকে নিমপাতার উপরেও আস্থা রাখেন, সেটাও ট্রাই করে দেখতে পারেন।
আগেকার দিনে শীতের পোশাক বা কম্বল গায়ে দেওয়ার আগেও তা রোদ খাইয়ে নেওয়া হত ভালো করে। তার উদ্দেশ্যও এক – সারা বছর আলমারিতে রাখা গরম জামাকাপড় ব্যবহার করার আগে ভালো করে জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া।
পোশাক কীভাবে কাচা উচিত, তার নির্দেশিকা দেওয়া থাকে নির্মাতাদের তরফে। সেই নির্দেশিকা মেনে চললে জামাকাপড়ের স্বাস্থ্য বেশিদিন ভালো থাকবে। খুব নরম ডিটারজেন্ট ব্যবহার করুন কাপড় কাচার সময়ে। তাতে হাত আর কাপড় দুই-ই ভালো থাকবে।
ফোটো: ইনস্টাগ্রাম