সম্প্রতি দক্ষিণ ভারতীয় এক টেলি তারকা মাত্র ২১ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন ফ্যাট লস সার্জারি করাতে গিয়ে। চেতনা রাজ নামের অভিনেত্রীকে নাকি বডি শেমিং সহ্য করতে হচ্ছিল কিছুদিন ধরে – তাই চেহারা আরও স্লিম ও আকর্ষক করে তোলার জন্য তিনি বেঙ্গালুরুর এক প্লাস্টিক সার্জেনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাড়ির কাউকে না জানিয়েই।
শরীর থেকে ফ্যাট বের করে নেওয়ার পদ্ধতি মোটেই সরল নয়, তা প্রাণঘাতী হতে পারে জেনেই রাজি হয়েছিলেন চেতনা – হাসপাতালের কনসেন্ট ফর্মে সই করেন এক বন্ধু। অপারেশনের পর তাঁর শরীরে তরলের মাত্রা বাড়তে থাকে অনিয়ন্ত্রিতভাবে, ফুসফুস ভরে যায় জলে। অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করেও বাঁচানো যায়নি এই সম্ভাবনাময় অভিনেত্রীকে।
সমস্যা হচ্ছে, এমন অজস্র ক্লিনিক আছে আপনার-আমার শহরেও, সেখানে প্রতিদিন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এই ধরনের অপারেশন হচ্ছেও। চুপচাপ সৌন্দর্য বাড়ানো বা ওজন কমানোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নানা বয়সের মানুষ। কোনও কসমেটিক সার্জারিই কিন্তু একেবারে ঝুঁকিহীন হয় না – বেশিরভাগ ক্লিনিকই সে কথা চেপে যায় নিজেদের ব্যবসায়িক স্বার্থের কথা ভেবে।
যেমন ধরুন, চেতনা রাজের উদ্দেশ্য ছিল লাইপোসাকশন করিয়ে পেট, কোমর, পা নির্মেদ করে তোলা। হাত, ঘাড়, গলাতেও এই অপারেশন হয় অবশ্য। ডাক্তাররা ত্বকের নিচে ক্যানুলা ঢুকিয়ে সাকশন পদ্ধতিতে ফ্যাট সেল বের করে দেন। ব্যথা থাকে বেশ কিছুদিন, কারও কারও ত্বকে কালশিটে পড়ে যায়, মারাত্মক রক্ত জমাট বাঁধতে পারে। সবচেয়ে বড়ো সমস্যা হয় ফ্যাট সেলে, মেদ কোষে – তার স্বাভাবিকতা হারিয়ে যায়। রক্তে ফ্যাটের মাত্রা বাড়ে, পরে কখনও ওজন বাড়লে এই জায়গাগুলোয় অনিয়ন্ত্রিত ফ্যাট জমতে পারে।
এই ধরনের অপারেশনের পর নার্ভ বা হার্ট, কিডনি, ফুসফুসের মতো অঙ্গ ড্যামেজ হওয়া বিচিত্র নয়। খুব দক্ষ ডাক্তারের হাতে প্লাস্টিক সার্জারি না করালেই বিপদ। তার চাইতেও বড়ো কথা, অনেক টাকা খরচ করে আর কষ্ট পেয়েও সব সময়ে যে প্রার্থিত ফল পাওয়া যাবেই, তার কোনও গ্যারান্টি নেই কিন্তু!
তার চাইতে গোড়া থেকেই নিজেকে ভালোবাসতে শিখুন, সন্তান বা ভাই/ বোন/ বন্ধুকেও তাই শেখান। অন্য কেউ বডি শেমিং করলেই ব্যাকুল হয়ে ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না। ডায়েট, ব্যায়ামের সাহায্যেই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা সব চাইতে বুদ্ধিমানের কাজ।