রোমমুক্তির কোনও পদ্ধতিই সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়, হতে পারে না। ভেবে দেখুন, আপনি কী করছেন – ত্বকের স্বাভাবিকতাকে ছেঁটে ফেলে তা সুন্দর করে তুলতে চাইছেন। এতে আসলে তো প্রকৃতির নিয়মের বিরুদ্ধেই যাওয়া হচ্ছে, তাই না? ওয়্যাক্সিং, শেভিং, লেসার হেয়ার রিমুভালের মতো সবগুলি পদ্ধতিরই কিছু না কিছু সমস্যা আছে।
তবে তার মধ্যে সন্দেহের আঙুল সবচেয়ে বেশি ওঠে শেভিংয়ের দিকেই। শেভিং করলে নাকি রোম আরও কড়া হয়ে যায়, তার বাড়বৃদ্ধি বাড়ে, কালো ছোপ পড়ে যেতে পারে বাহুমূলে – এরকম নানা ধারণা থাকে বলেই বহু নারী ব্যথা সহ্য করেও ওয়্যাক্সিং করান। কিন্তু স্পর্শকাতর ত্বকে বার বার ওয়্যাক্স করালে কালো ছোপ ধরে, ত্বক ঢিলেঢালা হয়ে যায়, তা জানেন?
লেসার হেয়ার রিমুভাল সাধারণের আয়ত্বের বাইরে – তা অত্যন্ত খরচসাপেক্ষ এবং বহু সিটিং দেওয়ার পরেও রোম ফিরে আসতে পারে। আপনার জেনেটিক প্যাটার্ন, রোমের বাড়, হরমোনের স্তর সব কিছুর উপর নির্ভর করবে প্রোসিডিওরের সাফল্য।
শেভ করার সবচেয়ে বড়ো সুবিধে হচ্ছে, তা আপনি নিজেই করতে পারবেন। অত্যন্ত দ্রুত গতিতে যখন খুশি তা করা সম্ভব এবং ব্যথা তো মোটেই হয় না! আর চুল খরখরে হয়ে যায় কিনা তা নিয়ে ভাবছেন? ধরুন একটি গাছের গোড়াটা রেখে আপনি তার ডালপালাগুলিকে ছেঁটে দিলেন – সময় হলেই আবার সেগুলি বেড়ে যায় তো? কখনও দেখেছেন সেই ডাল থেকে পাতার বদলে কাঁটা বেরোতে? ডাল মোটা হয় না, পাতাও সরু হয় না – তা হলে আপনার রোমও স্বাভাবিক নিয়ম মেনেই বাড়বে। তবে কয়েকটা বিষয় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন।
. কখনও অন্য কারও রেজার নেবেন না, আপনার রেজার একা আপনিই ব্যবহার করবেন।
. রেজারের ব্লেড যেন ভোঁতা হয়ে না যায় – তা নিয়মিত বদলাতে হবে। ভোঁতা ব্লেডে চাপ দিয়ে কাটলে ত্বকে আঘাত লাগতে পারে, কেটে-কুটে রক্তপাত হওয়াও বিচিত্র নয়। এই জন্য বলা হয় বিকিনি এরিয়া আর শরীরে ব্যবহারের রেজার আলাদা হওয়া উচিত। বিকিনি এরিয়ার রোম ঘন ও মোটা হয়।
. শেভিং করার পর ত্বকের রুক্ষতা বাড়ার অভিযোগ করেন অনেকে। স্নানের সময়ে অল্প ভিজে গায়ে ভালো করে কোনও ফোম বা সাবানের ফেনা লাগিয়ে শেভ করুন, তার পর ময়েশ্চরাইজার লাগিয়ে নেবেন, তা হলেই কোনও অসুবিধে হবে না।
. শেভ করার পর পরই রোদে বেরনো উচিত নয়, তা ছাড়া ত্বকের খোলা অংশে অবশ্যই সানস্ক্রিন লাগাতে হবে। না হলে ত্বকে কালো ছোপ পড়ার আশঙ্কা বাড়ে।
. শেভ করলে ইন-গ্রোথ বাড়ে – এরকম একটা সমস্যার কথা শুনেছেন? যার ইন-গ্রোথের সমস্যা আছে বরাবর, সে ওয়্যাক্স করলেও তা থাকবে। রেজার যদি আপনি উলটো-পালটা চালান, তা হলে অবশ্য সমস্যা বাড়বে। রেজারের গতিমুখ যেন এক দিকেই থাকে এবং তা হবে রোমের বাড়ের বিপরীতে।
. ব্যবহার করার আগে রেজার গরম জলে ধুয়ে নিতে হবে। ব্যবহার হয়ে গেলেও তাই নিয়ম। এর অন্যথা হলে কিন্তু ত্বকের ইনফেকশনের আশঙ্কা থেকেই যায়।