স্ট্রেস বা মাসলের ব্যথা থেকে মুক্তি দিতে বডি মাসাজের কোনও জুড়ি নেই! কিন্তু স্রেফ এখানেই শেষ নয়, ত্বকে বা মাথার তালুতে নিয়মিত তেল মালিশ করার আরও নানা উপকারিতা আছে। বাচ্চা-বুড়ো সবারই তেল মালিশের আরামটুকু ভালো লাগে।
মাসাজের সময় খুব নির্ভার লাগে? তার কারণ তখন আপনার পুরো নার্ভাস সিস্টেমও বিশ্রাম নিচ্ছে। ফলে শরীরের কোনও অঙ্গে ব্যথার বোধ থাকলে তা ক্রমশ কমে আসে, আরাম হয়। নার্ভাস সিস্টেম রিল্যাক্সড থাকার অর্থ হচ্ছে আপনার হরমোন উৎপাদনের হারেও স্বাভাবিকতা আসবে। সেই সঙ্গে কর্টিকোস্টেরয়েডের মতো স্ট্রেস হরমোনের নিঃসরণ কমবে, বাড়বে এন্ডরফিনের উৎপাদন।
এন্ডরফিনের প্রভাবেই মন ভালো থাকে, হাসি-খুশি ভাব আসে জীবনে। আর আপনি যদি ভিতর থেকে খুশি থাকেন, তা হলে ভালো থাকবে ত্বক, কমে আসবে চুল পড়ার হার। নিয়মিত হবে মাসিক ঋতুচক্র। রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়ে আসবে, সেই সঙ্গে ভালো ঘুম হবে।
মাসাজের সময় যেহেতু ত্বকের উপর সরাসরি চাপ পড়ে, তাই মৃত কোষ জমে থাকতে পারে না। রক্ত চলাচল করে সুষ্ঠুভাবে, ফলে শরীরে দেখা দেয় নতুন দীপ্তি। তাই নিয়মিত তেল মালিশ ত্বককে ঝলমলে ও আর্দ্র রাখে।
অনেকেই প্রশ্ন করেন, স্নানের আগে তেল মালিশ করা উচিত, না পরে? আগে তেল মালিশ করলে আপনার রক্ত চলাচলের হার বাড়বে, তার পর জলের স্পর্শ পেলে আপনি চনমনে বোধ করবেন। স্নানের পরে তেল লাগানো হয় মূলত ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য। চুলে তেল মাখার ক্ষেত্রেও নিয়ম আছে – স্ক্যাল্পে মালিশ করলে মাথার তালুতে রক্ত চলাচল বাড়ে, আর চুল কোমল রাখার জন্য আপনাকে তার দৈর্ঘ্য বরাবর তেল লাগাতে হবে।
মাসাজ থেরাপিস্ট কি কখনও প্রক্রিয়াটি শুরুর আগে আপনাকে গভীর শ্বাস নেওয়া ও ধীরে ধীরে তা ছাড়ার পরামর্শ দিয়েছেন? তাঁর কথা মেনে চলার চেষ্টা করুন। দৈনন্দিন জীবনের স্ট্রেস আমাদের মাসলগুলিকে রিল্যাক্স করতে দেয় না। সেই সঙ্গে তা স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাসেও বাধা সৃষ্টি করে। মাসাজ চলাকালীন যদি আপনি গভীর শ্বাস নেন, তা হলে তা ছড়িয়ে পড়বে শরীরের প্রতিটি কোণে।
তবে চেষ্টা করুন প্রশিক্ষিত ম্যাসিওরের সাহায্য নিতে। তা না হলে নিজে ম্যাসাজ করে নিন – না জেনে-বুঝে ম্যাসাজ করলে কিন্তু ক্ষতির আশঙ্কাও থেকে যায়।
কোন তেলে ম্যাসাজ করা উচিত বুঝতে পারছেন না? আপনার ত্বকের প্রকৃতি বুঝে তেল বেছে নিন। অলিভ বা আমন্ড তেল খুব দামি। খাঁটি, কোল্ড প্রেসড নারকেল বা সরষের তেল পাওয়া সহজ, দামও কম। সঙ্গে কয়েক ফোঁটা পছন্দের এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে নিন, তা হলে চমৎকার সুগন্ধও মিলবে।