না, আদতে আবেগ ব্যাপারটা খুব একটা খারাপ নয়। আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হলে সিদ্ধান্ত নিতে সুবিধে হবে, সম্পর্ক সুস্থ থাকবে। লোকজনের সঙ্গে যখন কথা বলবেন, তারা আপনার ব্যবহারে মুগ্ধ হবে, নিজের মনও ভালো থাকবে।
সমস্যা কখন হয় জানেন? যখন আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না, তখন। কথায় কথায় আপনি কেঁদে ভাসান? খুব মাথা গরম করেন? বাচ্চার উপর রাগ করে ধরে পেটান? সেক্ষেত্রে আপনাকে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করার কায়দাটা শিখতে হবে – না হলে কিন্তু বিপদ। আপনার কোনও সম্পর্কই সুস্থ থাকবে না, লোকে বলবে ব্যবহার খারাপ। সমাজে থাকতে অসুবিধে হবে।
কখন বুঝবেন যে আপনার আবেগ অতিরিক্ত বেশি?
. বার বার যদি কাছের মানুষের সঙ্গে তর্ক, ঝগড়ার কারণে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
. বড়োদের ক্ষেত্রে অফিস আর ছোটোদের স্কুল বা কলেজে সমস্যা তৈরি হয়।
. দুঃখ, অসহায়তা বা রাগের বহিঃপ্রকাশ যদি খুব তীব্র হয়। হয়তো টানা কয়েকদিন ডিপ্রেসড থাকলেন, বা তুমুল তর্ক করে নিজেই অসুস্থ হয়ে পড়লেন, সারা রাত ঘুম এলো না – এরকম বার বার হলে।
. নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখার জন্য মদ, ড্রাগস বা কোনও সাবস্ট্যান্স অ্যাবিউস করার প্রয়োজন পড়ছে।
# খেয়াল রাখবেন, আমরা কিন্তু একবারও আপনাকে আবেগ ছেঁটে ফেলতে বলছি না। কেবল পরামর্শ দিচ্ছি তার উপর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখার। আবেগ মেরে ফেলতে গেলে কিন্তু উলটো সমস্যা হতে পারে।
# খুব মন খারাপ লাগলে বা কষ্ট হলে আগে বোঝার চেষ্টা করুন তা কেন হচ্ছে। কেউ আপনাকে আঘাত করেছে? দরকার হলে একটা খাতায় নোট করুন নিজের ইমোশনের ওঠা-পড়া। বার বার সেটা পড়ুন – দেখবেন, একটা সময়ে তুচ্ছ কারণে ভেঙে পড়ছেন না।
# সব জায়গায় নিজের আবেগের বহিঃপ্রকাশ করা যায় না – এ কথাটা আপনাকে বুঝতে হবে। অফিসের বসের উপর রাগ হতেই পারে, কোনও সহকর্মীর ব্যবহারে আহত হওয়াটাও বিচিত্র নয়। কিন্তু সেই রাগটা কি আর আপনি সবার সামনে দেখাতে পারবেন? বাড়ি এসে বাথরুমে চিৎকার করে কাঁদতে কোনও বাধা নেই – তবে নিজেকে এই সময়টা দিতে হবে।
# মেডিটেশন ও ব্রিদিং এক্সারসাইজ অভ্যেস করুন। হ্যাঁ, তাতে সত্যিই কাজ হয়। রাগ বা দুঃখ হলে ডিপ ব্রিদিং করলেও দারুণ ফল পাবেন।
# স্ট্রেস বাড়তে দেবেন না। তাতে সমস্যা গভীর হবে। আর যদি দেখেন যে কিছুতেই নিজের আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারছে না, তা হলে থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে হবে।