আজকাল ফিটনেস টিপস হিসেবে একটা তত্ত্ব খুব চলে – সুস্থ থাকতে চাইলে রোজ ১০০০০ পা হাঁটা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু ঠিক কোন গবেষণায় এই ম্যাজিক নাম্বারে পৌঁছনো সম্ভব হয়েছে, তা নিয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করেন না বিশেষ। আমরা নানা তথ্য ঘেঁটে যে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি, তা এইরকম।
. ১০০০০ এমন একটা সংখ্যা, যা মনে রাখা সহজ। সুস্থ, স্বাভাবিক একজন মানুষ দিনের যে কোনও একটা সময় বের করে হাতে ফোন নিয়ে হাঁটতে বেরোন – জোর কদমে ঘণ্টা-সোয়া ঘণ্টা হাঁটলে আপনার টার্গেট পূরণ হয়ে যাবে – ফোনের ফিটনেস অ্যাপ জানিয়েও দেবে তা। সেই সঙ্গে যদি ডায়েট মেনে চলেন, রোজ প্রচুর ফল-সবজি আর জল খাওয়ার অভ্যেস থাকে, তা হলে নিশ্চিতভাবেই ফল পাবেন।
. তাই বলে আবার ভেবে নেবেন না যে প্রচুর গবেষণার পর এ হেন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। মূলত বিজ্ঞাপনের ট্যাগলাইন হিসেবে এ ধারণার উৎপত্তি। বিশ্বাস হচ্ছে না? ১৯৬৪ সালে টোকিয়ো অলিম্পিক্স শুরুর কিছুদিন আগে ‘মানপো কেই’ নামের একটি পেডোমিটার বিক্রি করতে আরম্ভ করে এক জাপানি সংস্থা, যার আক্ষরিক অর্থ ‘১০০০০ স্টেপ মিটার’। সেই থেকেই এই নম্বরটি জনপ্রিয়।
. সুস্থ থাকতে তা হলে রোজ ঠিক কতটা হাঁটা দরকার? বেশিরভাগ গবেষক বলছেন, মোটামুটিভাবে ৫০০০-৬০০০ পা হাঁটাই যথেষ্ট। আসল কথা হচ্ছে আপনাকে অ্যাকটিভ থাকতে হবে। সারাদিন যাঁরা একটা চেয়ারে বসে কাজ করেন, তাঁদের বিশেষ করে হাঁটাচলা কম হয়। অফিস থেকে ফিরে এতই ক্লান্ত লাগে যে বাড়ির কাজ করার আগ্রহ বা উৎসাহ থাকে না। সেই ফাঁকেই জমতে অরম্ভ করে মেদের পরত। বাড়ে কোলেস্টেরল আর ব্লাড সুগারের মাত্রা। রোজ যাঁরা সংসারের কাজকর্ম করেন, তাঁদের কত পা হাঁটলেন তা নিয়ে মাথাব্যথা না করলেও চলবে।
. হাঁটা সবচেয়ে সহজ ব্যায়াম, বিশেষ করে যাঁরা জিমে যাওয়ার এনার্জি পান না, তাঁদের ক্ষেত্রে। ১০০০০ পা হাঁটলে আপনার মোটামুটি ৩০০-৪০০ ক্যালোরি পুড়বে। যাঁরা ব্যাডমিন্টন খেলতে ভালোবাসেন, তাঁরা ১ ঘণ্টা খেললে পোড়ে ৫০০ ক্যালোরি। এর পুরোটাই কিন্তু গড় হিসেব – আপনার শরীর ঠিক কতটা ক্যালোরি পোড়াচ্ছে, তা নির্ভর করে নানা ফ্যাক্টরের উপর। কোনও একটা ধারণা আঁকড়ে পড়ে থাকবেন না, নানা ধরনের ব্যায়াম ট্রাই করে দেখতে থাকুন।