কিছু টাকা জমানো আছে যাঁদের, তাঁরা এই অতিমারির আবহেও অন্যদের চেয়ে ভালো আছেন। হ্যাঁ, অনিশ্চয়তা তো আছেই, কিন্তু আপদে-বিপদে কারও কাছে হাত পাততে তো আর হবে না!
যাঁরা এক কালে আয়ের বেশিরভাগটাই খরচ করে ফেলতেন, তাঁরাও এখন অনেক সংযত। আর দেরি না করে, আজ থেকেই কিছু টাকা জমাতে আরম্ভ করুন। মেনে চলুন এই ৫টি নিয়ম।
১. সঞ্চয় শুরু করার কোনও বয়স হয় না
আপনি ৫০-এর কোঠাতে এসেও টাকা জমাতে আরম্ভ করতে পারেন, তাতে কোনও সমস্যা নেই। হয়তো আগে শুরু করলে আরও বেশি জমত – কিন্তু তা ভেবে আক্ষেপ করবেন না।
যাঁরা ভাবছেন, রোজগার কমে গিয়েছে, খরচ বেড়েছে – এই অবস্থায় সঞ্চয় করবেন কীভাবে? তাঁদের জন্য ছোট্টো একটা পরামর্শ। ধরুন আপনার ১০ টাকা আয়। তার ৩ টাকা সরিয়ে রাখুন সঞ্চয় বাবদ, ১ টাকা আপৎকালীন ফান্ড হিসেবে রাখতে হবে।
আপনাকে মন শক্ত করে ধরে নিতে হবে যে আয় হয়েছে ৬ টাকা। তার মধ্যেই জীবন কাটাতে হবে। সেটা কীভাবে সম্ভব? চেষ্টা করুন, হয়ে যাবে! মানুষ পারে না, এমন কাজ নেই।
২. পরিবারের কাছে কখনও আর্থিক পরিস্থিতি লুকোবেন না
এটা একেবারে গোড়া থেকেই মেনে চলুন। বাবা-মাকেও মিথ্যে বলবেন না, পরবর্তীকালে স্ত্রী/ স্বামী বা পার্টনারকেও না। তা হলে ক্ষমতা বুঝে খরচ করা সম্ভব। সবাইকে বুঝিয়ে বলুন যে চাইলেই সপ্তাহে দু’বার বাইরে থেকে খাবার অর্ডার করা, বেড়াতে যাওয়া, শপিং করা সম্ভব নয়। গড়া থেকে এই ব্যাপারটা পরিষ্কার হয়ে গেলে পরিবারে অপচয় হয় না।
৩. সঞ্চয় করে টাকা বাড়ে না, বিনিয়োগ করতে হয়
বিনিয়োগ আর সঞ্চয়ের মধ্যে ফারাক আছে। সঞ্চয় একটা জমা রাশি, তা নানাভাবে খাটিয়ে টাকার পরিমাণ বাড়ানো যায়। স্টক মার্কেটে টাকা খাটাতে পারেন, এসআইপি করা যায়, বাড়ি কিনে ভাড়া দিয়ে দিতে পারেন — বিনিয়োগের হরেক উপায় সম্পর্কে জেনে নিন কোনও পরামর্শদাতার থেকে। কতটা ঝুঁকি নিয়ে আপনি টাকা খাটাতে আগ্রহী, সে বিষয়ে আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে।
৪. জীবনের প্রথম রোজগার থেকেই সঞ্চয় শুরু করা উচিত
কাল করব বলে ফেলে রাখলে হবে না – জীবনের প্রথম চাকরির পয়লা মাইনে থেকেই ৪০ শতাংশ করে টাকা সরিয়ে রাখতে আরম্ভ করুন। তা হলে একটা বয়সের পর আপনার বেশ ভালো টাকা জমে যাবে।
৫. ক্রেডিট কার্ড আর লোনের চক্করে পড়বেন না
মানুষের চাহিদার কোনও শেষ নেই। প্রথমে মনে হবে, শোওয়ার ঘরে এসি ছাড়া চলবে না। তারপর মনে হবে বসার ঘরেও একটা লাগানো যাক। এসিটা হুট করে কেনাও হয়ে যাবে নো-কস্ট ইএমআই দিয়ে। কিন্তু খান বা না খান, মাসে মাসে সেই ইএমআই শুধতেই হবে। ক্রেডিট কার্ডের পারসোনাল লোন তো আরও খারাপ। একান্ত বাধ্য না হলে এ সব ফাঁদে পা দেবেন না। টাকা জমান, অপেক্ষা করুন, তার পর খরচ করবেন।