আর্থিকভাবে কম-বেশি সবাই টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে দিয়েই যাচ্ছেন এখন, এই অবস্থা যে আরও কতদিন চলবে, সে সম্পর্কেও কোনও আন্দাজ পাওয়া যাচ্ছে না। চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ, ব্যবসায় চলছে ঘোর মন্দা। সেই সঙ্গে দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছে মারণ রোগ।
ফাইনানশিয়াল প্ল্যানার সজল রায় বলছেন, “আপনি যদি গত 30-40 বছরের ইতিহাস দেখেন, তা হলেই বুঝতে পারবেন যে ইকুইটি মার্কেট ডাউন হতেই পারে, কিন্তু বছর দুয়েকের মধ্যেই আবার উঠবে এবং তখন ভালোই রিটার্ন মিলবে। তাই যে এসআইপিগুলি আছে, সেগুলি বন্ধ করবেন না, চালিয়ে যান।”
রিস্ক ম্যানেজার আশিস কুমার দাসের বক্তব্য, “জীবনবিমা করান, মেডিক্লেম করা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনি যে সংস্থাতেই চাকরি করুন, সেখানে যত ভালো মেডিক্লেম কভারেজ থাক না কেন, ব্যক্তিগত মেডিক্লেম করাটা একান্ত জরুরি। হঠাৎ কর্মহীন হলেও অসুবিধে হবে না।”
ভারতীয়দের মধ্যে মেডিক্লেম বিষয়ে একটা উদাসীনতা কাজ করে, যেহেতু তার রিটার্নটা চোখে দেখা যায় না। দ্বিতীয় যে সমস্যাটা হয়, তা হচ্ছে ক্লেম করার সময় কোম্পানিগুলি নানা ফ্যাকড়া তৈরি করে, অনেক সময়েই পুরো টাকাটা মেলে না।
আশিস বলছেন, “এর দায়ও কিন্তু যাঁরা পলিসি করছেন তাঁদের উপরেই বর্তায়, কারণ তাঁরা গোড়াতেই সমস্ত সত্যিটা খোলাখুলি বলেন না। যাঁর ১০ বছর সুগার আছে, তিনি বলবেন তিন বছর আছে, বয়স কমাবেন… এই সব সমস্যা থেকেই ক্লেম সংক্রান্ত সমস্যাগুলি হয়। চেষ্টা করলেই তা এড়ানো সম্ভব।”
আপনার পক্ষে ঝুঁকি নেওয়া সম্ভব হলে এসআইপি বাড়াতে পারেন। সোনার বাজারদর কখনও খুব পড়ে না, তাই সঞ্চয়ের 10 শতাংশ সোনায় রাখতে পারলে ভালো। গভর্নমেন্ট অফ ইন্ডিয়া বন্ড হয় সাত বছরের জন্য, রিটার্নও ভালো, সেখানেও বিনিয়োগ করা যায়।
সেই সঙ্গে চেষ্টা করুন একেবারে বাহুল্যবর্জিত জীবন কাটানোর। আপাতত শিকেয় তুলে রাখুন অপ্রয়োজনীয় শপিং বা বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান। হাতে বাড়তি টাকা থাকলে সেটা সযত্নে রাখুন, দরকারে ইকুইটি মার্কেটে লগ্নি করতে পারেন। কিন্তু কথায় কথায় ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার চলবে না।
টাকাপয়সা, খরচপত্র নিয়ে নিয়মিত পরিবারের সবাই একসঙ্গে বসুন। কতটা খরচ বাঁচানো গেল, আরও কতটা বাঁচানো সম্ভব, কেন সে টাকাটা বাঁচানো দরকার, এ সব নিয়ে কথা বলুন সবার সঙ্গে। পরিবারের সবাই দায়িত্ব নিলে খরচ সত্যিই কমানো যায়।