মানুষ কম বয়সে যখন বেশি উপার্জন করে, তখন টাকা জমিয়ে রাখার কথা ভাবে না। অল্প বয়সে সাংসারিক দায়দায়িত্ব বেশি থাকে না, তখন থেকেই টাকা জমাতে শুরু করুন। মাইনের ৫০% খরচ করুন, বাকিটা বিনিয়োগ আর সঞ্চয় করতে পারলে বয়সকালে পিছন ফিরে তাকাতে হবে না!
আজকাল ক’টা চাকরিতেই বা পেনশনের সুবিধে মেলে? কিন্তু বয়স হলে তো আর খরচ বন্ধ হয়ে যায় না! তাই মাসে মাসে নির্দিষ্ট একটা পেনশন পেলে সুবিধেই হবে। ন্যাশনাল পেনশন স্কিমে আপনি এভাবেই টাকা কমাতে পারেন মাত্র ১৮ বছর বয়স থেকে! ৭০ বছর বয়সেও যোগদান করা যায় এই প্রকল্পে, চালাতে পারেন ৭৫ বছর বয়স পর্যন্ত!
সরকারি চাকরি যাঁরা করেন, তাঁদের বাধ্যতামূলকভাবে এনপিএসে টাকা রাখতেই হয়। কিন্তু এ দেশের জনসংখ্যার বিরাট একটা অংশই বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত, তাঁদের গ্রাহক হিসেবে পাওয়ার জন্য নানা সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার কথা ভাবছেন ন্যাশনাল পেনশন স্কিম কর্তৃপক্ষ।
ন্যাশনাল পেনশন স্কিমের টাকা শেয়ার ও ঋণপত্রের বাজারে খাটানো হয়, ফলে রিটার্ন ভালো। তা ছাড়া এটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা হচ্ছে ভারত সরকারের অর্থমন্ত্রকের অধীন পেনশন ফান্ড রেগুলেটর। ফলে একেবারে নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন। আপনি যদি চাকরি পালটান বা অন্য কোনও শহরে পাকাপাকি থাকার কথা ভাবেন, তা হলেও পেনশন ফান্ডে কোনও সমস্যা হবে না।
এবার প্রশ্ন, ঠিক কত টাকা বিনিয়োগ করা যায় এই স্কিমে? যাঁরা চাকরি করেন, তাঁরা মাইনের ১০% রাখতে পারেন এই ফান্ডে। যাঁরা ব্যবসায়ী, তাঁরা বার্ষিক আয়ের ২০% পর্যন্ত নিয়োগ করতে পারেন। আয়কর ছাড়ের ব্যবস্থা আছে – ৫০,০০০ টাকা সরাসরি ৮০সিসিডি খাতে ছাড় পাওয়া যায়।
ব্যক্তিগতভাবে এই অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন, অফিস উদ্যোগী হয়ে খুলে দিলে তো আরওই ভালো হয়! একটা পার্মানেন্ট রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্টের আন্ডারে আপনি টায়ার ১ ও টায়ার ২ – এই দু’ ধরনের অ্যাকাউন্ট রাখতে পারেন। টায়ার ১ সাধারণ পেনশন অ্যাকাউন্ট, টায়ার ২ তে বাড়তি কিছু টাকা জমা রাখতে পারেন, তা তুলেও নেওয়া যায় যে কোনও সময়ে। তবে টায়ার ২-এর টাকায় কর ছাড় মেলে না। টায়ার ১-এ বছরে অন্তত ১০০০ টাকা রাখতেই হবে, টায়ার ২-এর ক্ষেত্রে তেমন কোনও নিয়ম নেই।
আগামী বাজেটে এনপিএস লগ্নিতে কর ছাড়ের মাত্রা বাড়ানো হতে পারে বলে জোর খবর আছে – ৫০,০০০ টাকা এর জায়গায় নাকি ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড়ের আওতায় আসবে। সেক্ষেত্রে এই স্কিম আরও লাভজনক হয়ে উঠবে!