আপনি যদি যে কোনও সময়ে পাঁচজন স্কুল ছাত্রকে জিজ্ঞেস করেন, কোন বিষয় পড়তে তাদের সবচেয়ে খারাপ লাগে বা স্কুলের কোন শিক্ষককে তারা সবচাইতে বেশি ভয় পায় – তা হলে অন্তত তিনজনই অঙ্কের নাম নেবে। এ কথা আমরা বলছি না – অধিকাংশ গবেষণার ফল তাই বলছে।
কিন্তু অঙ্কের মধ্যে সত্যিই ভয় পাওয়ার মতো বিষয় আদৌ আছে কী? কেনই বা বেশিরভাগ ছাত্রছাত্রীর কাছে তা বিভীষিকা হয়ে দাঁড়িয়েছে? এর উত্তরে একদল বিজ্ঞানী বলেন যে, যে সব মানুষের ব্রেনের বামদিক বেশি সচল, তাঁরা সিকুয়েন্স ভালো বোঝেন – তাঁদের অঙ্কের মাথাও ভালো। যাঁদের ডানদিকের অংশ বেশি শক্তিশালী, তাঁরা এগিয়ে থাকবেন মৌলিক চিন্তাভাবনার দিক থেকে।
অনেকেই এ যুক্তি পুরোপুরি উড়িয়ে দেন – তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, অঙ্ককে ভয় পাওয়ার কারণ একটাই, তা হল নড়বড়ে ভিত। সাধারণত ক্লাস ফাইভ সিক্স থেকে এই ব্যাপারটা শুরু হয়, তার পর জীবন গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সমস্যা জটিলতর হয়। উঁচু ক্লাসে গিয়ে অ্যালজেব্রা শুরু হবে – আগের কনসেপ্ট একেবারে ক্লিয়ার না হলে কিন্তু অঙ্ক বোঝা হয়ে দাঁড়াবে।
এ কথা ঠিক যে স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাসের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর দিকে আলাদা করে নজর দিতে পারেন না। সেই একই সমস্যা কিন্তু কোচিং ক্লাসেও হয়। তাই আপনার সন্তান যদি অঙ্কে লাগাতার খারাপ নম্বর পায় বা মোটেই অঙ্ক নিয়ে বসতে না চায় তা হলে তাকে বকাবকি করবেন না। উলটে এমন কোনও শিক্ষক খুঁজে বের করুন যিনি খুব ধৈর্য সহকারে তার সব ধোঁয়াশা দূর করে দিতে পারবেন।
. অঙ্ক নিয়ে রোজ বসা বাধ্যতামূলক করে দিন – প্র্যাকটিসের পিছনে অন্তত ঘণ্টাখানেক বরাদ্দ করতেই হবে। বারবার অভ্যেস করলে বা প্রশ্নপত্র সলভ করলে পরীক্ষার হলে গিয়ে কোনও সমস্যাই কঠিন মনে হবে না।
. ক্লাস এইট বা নাইনে গিয়ে অঙ্ক নিয়ে সমস্যা হচ্ছে? একটা সপ্তাহ বাচ্চার সঙ্গে রোজ বসুন। সিক্স আর সেভেনের অঙ্কের প্রতিটি ধরে ধরে করান। আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন কোথায় কোথায় তার দুর্বলতা আছে। একবার পরিষ্কার করে বুঝে গেলেই আর সমস্যা থাকবে না।
. অঙ্ক ক্লাসে শিক্ষককে ভয় পেয়ে অনেক বাচ্চাই মুখ খোলে না, বন্ধুদের সামনে নিজের অক্ষমতার কথা বলতে লজ্জাও পায়। কিন্তু বুঝতে না পারলে সেটা খোলসা করে বলতেই হবে – ভিত নড়বড়ে থাকলে কিছুতেই কিছু করা যাবে না।
. প্রতিটি অনুশীলনীর উদাহরণের অঙ্ক অভ্যেস করতেই হবে। দরকারে একাধিক বই কিনে দিন। ধাপে ধাপে এই অঙ্কগুলি করলেই সমস্যার সমাধান হবে।