বাজারে সোনার দাম এই মুহূর্তে ঠিক কত, সে হিসেব রাখেন? বাজারে যতই ওঠাপড়া থাক না কয়েন, কখনও দেখবেন না যে সোনার দাম গিয়ে তলানিতে ঠেকেছে। গয়না হিসেবে মেয়েদের বিয়ের সময় যে সোনাটা দেওয়া হয়, সেটাও তো বিনিয়োগ হিসেবেই ধরার রেওয়াজ! তবে গয়নার সোনা বিক্রি করতে গেলে তেমন দাম পাওয়া যায় না, তা ২২ ক্যারাটের হয়, কারুকাজ করার জন্য নানা উপাদান মেশাতে হয় মূল ধাতুতে। তাই সোনায় বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা থাকলে মেনে চলুন আমাদের পরামর্শ।
সোনায় বিনিয়োগ করার নানান রাস্তা আছে। আপনি গয়নার পাশাপাশি বার বা কয়েন হিসেবে সোনা কিনতে পারেন। গোল্ড মিউচুয়াল ফান্ড, গোল্ড বন্ড, গোল্ড এক্সচেঞ্জড ট্রেডেড ফান্ড ইত্যাদিতে টাকা রাখা যায়। প্রত্যেকটির নিজস্ব কিছু সুবিধে-অসুবিধে আছে। জেনে নিন এক ঝলকে।
সোনার বার বা কয়েন: এই খাতে বিনিয়োগ করাটা সবচেয়ে সহজ। কোনও পেপারওয়ার্ক নেই, লাগবে না ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট। সরাসরি কিনতে পারবেন বাজার থেকে, তার জন্য আলাদা কোনও চার্জ দিতে হবে না। কিন্তু ফিজিকাল সোনা কাছে রাখা বিপজ্জনক, ব্যাঙ্কের লকারে রাখতে পারেন – সেক্ষেত্রেও কিন্তু ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় না। বাজারের ওঠাপড়ার সঙ্গে সোনার দাম উঠবে-নামবে। তবে দোকান থেকে ২ লক্ষ টাকার বেশি সোনা কিনতে গেলে কিন্তু আপনাকে প্যান, আধার, ভোটার আইডি বা পাসপোর্টের মতো কোনও বৈধ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখতে হবে। বাজার থেকে সোনা কিনতে গেলে আমদানি শুল্ক দিতে হবে, সেটা খেয়াল রাখবেন।
গোল্ড ইটিএফ বা এক্সচেঞ্জড ট্রেডেড ফান্ড: প্রথমে আপনাকে একটা ডিম্যাট অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলতে হবে। এবার বাজার থেকে আপনি সোনা কিনবেন খাতায়-কলমে – কিন্তু যেহেতু হাতে সোনাটা থাকবে না, তাই বিপদের আশঙ্কাও অনেকটাই কম। এইটুকু সুবিধের বিনিময়ে আপনাকে দিতে হবে ব্রোকারেজ ফি আর অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট বাবদ কিছু খরচপত্র, পেপারওয়ার্ক থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকলেও চলবে না। বাজারে সোনার দাম বাড়া-কমার উপর নির্ভর করে ইটিএফের মূল্য।
গোল্ড ফান্ড: যে সব সংস্থা গোল্ড মাইনিংয়ের সঙ্গে যুক্ত, তাদের কাছ থেকে কেনা যায় গোল্ড ফান্ড। ডি-ম্যাট অ্যাকাউন্ট ছাড়াও কেনা যায়, তবে পেপারওয়ার্ক আছে। ব্যবহারিক দিক দিয়ে এগুলি মিউচুয়াল ফান্ডের মতো — বাজারে সোনার দামের ওঠাপড়ার সঙ্গে গোল্ড ফান্ডের কোনও যোগ নেই।
গোল্ড বন্ড: বাজার থেকে নিরাপদ সোনা কেনার সবচেয়ে সহজ রাস্তা হচ্ছে গোল্ড বন্ড। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া গোল্ড বন্ডের উপর বার্ষিক ২.৫% সুদ ধার্য করেছে। ন্যূনতম ১ গ্রাম সোনা কেনা যায়, সর্বাধিক মান ৪ কেজি। সোনার ওজনের উপর নির্ভর করে বন্ডের পরিমাণ। বন্ডের সময়কাল আট বছর, পাঁচ বছর পর এক্সিট অপশন থাকে। দোকান থেকে সোনা কিনলে যে সব প্রমাণপত্র লাগে, তা গোল্ড বন্ড কেনার সময়েও পেশ করতে হতে পারে।