লোন নিয়ে একটা ফ্ল্যাট কেনার পরিকল্পনা রয়েছে? ভাবনাটা খুব মন্দ নয়। মাথার উপর ছাদ হয়ে যাবে, পাশাপাশি ট্যাক্স বাঁচবে। তাই বাড়ি কেনাটাকে ভালো ইনভেস্টমেন্টের মধ্যেই ধরা হয়।
কিন্তু আপনি কতটা লোনের বোঝা নিজের ঘাড়ে চাপাবেন, তা নিয়েও বিস্তর ভাবনাচিন্তা করা উচিত। কারণ কয়েকটা ইনস্টলমেন্ট দিতে ব্যর্থ হলেই ব্যাঙ্ক কিন্তু আপনার সম্পত্তির উপর কবজা করে নেবে।
. সাধারণত একজন চাকরিজীবী মানুষকে কত টাকা লোন দেওয়া হয়? দেখুন ব্যাঙ্ক ভেদে নিয়মের এদিক-ওদিক হতে পারে, কিন্তু মোটের উপর আপনার যা মাইনে তার ৬০ গুণ বেশি লোন পেতে পারেন বাড়ির জন্য। তবে মাইনে বলতে আপনার মূল স্যালারিই ধরা হবে – অ্যালাওয়েন্স কিন্তু ধরা হবে না।
. সহজ হিসেব হচ্ছে, আপনার হাতে মাইনে বাবদ ৪০ হাজার টাকা এলে আপনি আন্দাজ ২৫-২৬ লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে পেতে পারেন। আপনি কত দিনের জন্য লোন নিচ্ছেন, সেই বুঝে স্থির হবে ইএমআইয়ের পরিমাণ।
. মাসিক কিস্তি এমন হওয়া উচিত যা দেওয়ার পরেও আপনি স্বচ্ছন্দে সংসার চালাতে পারবেন। আচমকা কোনও বড়ো খরচ হলেও যেন ইএমআই আটকে না যায় তা নিশ্চিত করতে হবে। যদি আপনার হাতে মাসে ৪০ হাজার টাকা আসে, তা হলে বাড়ির ঋণবাবদ বড়োজোর ১৫ হাজার কাটানো উচিত, তার বেশি হলেই গলায় ফাঁস পড়বে।
. চাকরি জীবনের একেবারে গোড়া থেকেই বাড়ি কেনার টাকা জমান। চেষ্টা করুন বাড়ির মূল্যের ৫০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট করার। তার জন্য অন্য কোনও অ্যাসেট বেচে দিতেও পারেন। পিএফ বা কোনও সঞ্চয়ের টাকায় হাত না দিয়ে পৈতৃক বা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করতে পারেন।
. ইএমআই যেন কোনওভাবেই মিস না হয়, তা নিশ্চিত করুন। সুদের বোঝা বাড়বে, বাড়ি বেহাত হতে পারে – সবদিক ভালো করে ভেবে তবেই এগোন। বাড়ির লোন চলাকালীন অন্য সমস্ত খরচে রাশ টান্তে হবে। না হলে বিরাট বিপদে পড়বেন।
. ইএমআই ছাড়াও ব্যাঙ্ক প্রসেসিং ফি, সার্ভিস চার্জ, অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ফি নেয় গ্রাহকের কাছ থেকে। ইন্টারনেটে নানা অপশন খতিয়ে দেখুন – কোন ব্যাঙ্ক সবচাইতে বেশি সুবিধে দিচ্ছে তা জেনে তবেই পা বাড়ানো উচিত।
. আপনার নামে ক’টি লোন চলছে এই মুহূর্তে? তার পেমেন্ট ঠিকমতো হচ্ছে তো? তার উপর নির্ভর করে স্থির হবে আপনার ক্রেডিট স্কোর। ক্রেডিট স্কোর ভালো না হলে বেশি টাকা ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা কম।