এক সুপারস্টার বাবা আর তাঁর তরুণ ছেলে এখন গোটা দেশের আলোচনার কেন্দ্রে। অতিরিক্ত অর্থ থাকলে কি সত্যিই ছেলেপুলে বখে যায়? ছেলে মদ-গাঁজা সমেত ফুর্তি করতে গিয়ে ধরা পড়লে বাবা-মায়ের অভিভাবকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় কী? এমন হরেক প্রশ্ন উঠেছে গত কয়েক দিনে।
আমরা অত জটিলতায় না ঢুকে কয়েকটি জরুরি বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাই। উঠতি বয়সে, স্কুলের শেষ ধাপে বা কলেজে থাকাকালীন নেশার বস্তু, বিপরীত লিঙ্গ বা যৌনতা নিয়ে কোনও এক্সপেরিমেন্ট করেননি, এমন মানুষ নিশ্চয়ই লাখে-লাখে পাওয়া যাবে। কিন্তু পাশাপাশি এমন অনেকেই আছেন যাঁরা সিগারেটে সুখটান দিয়েছেন, মাদক নিয়েছেন এক-আধবার। একাধিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন – তার পর নিজের ভুল বুঝেছেন এবং ফিরে এসেছেন স্বাভাবিক জীবনে।
তাই আরিয়ান খানকে আপাতত একটা বেনিফিট অফ ডাউট দিয়ে সমস্যাটা নিয়ে একেবারে ব্যক্তিগত স্তরে একটা আলোচনায় আসা যাক। আপনি হয়তো নিশ্চিত যে আপনার পুত্র বা কন্যা – যে কিনা স্কুলের শেষ ধাপে বা কলেজের গোড়ার দিকে দাঁড়িয়ে আছে, সে কখনও দুঃসাহসিকতার পরিচয় দেবে না। আপনি তাকে সে শিক্ষায় বড়ো করেননি। কিন্তু তা-ও যদি বিপদ হয়, কী করবেন?
ধরুন, তুমুল মারামারি করেছে ছেলে, মেয়ে সই নকল করতে বা পরীক্ষায় টুকতে গিয়ে ধরা পড়েছে। কী করবেন তখন? বেধড়ক ঠ্যাঙানিই কি সেরা ওষুধ? নাকি সবাইকে বলবেন যে সে যা করেছে, তার দায় তার একার – আপনি কোনওভাবেই কোনও ঝামেলায় জড়াবেন না?
বিশ্বজুড়ে যাঁরা শিশু-কিশোরদের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা একটা কথা বারংবার বলে থাকেন। সন্তান বিপদে পড়লে, কোনও অন্যায় করে ধরা পড়ল শাসন পরে করবেন, আগে তার পাশে দাঁড়ান। তাকে বিপদ থেকে উদ্ধার করুন সর্বশক্তি দিয়ে।
. যৌবনের ধর্মই ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া, হঠকারিতা করে ফেলা। তেমন কিছু করলে আপনার সন্তান নিজেই অপরাধবোধে ভুগবে। তাকে প্রকাশ্যে অপমান করবেন না।
. শাসন করুন একান্তে। অন্যের সামনে অপমান করবেন না। যদি তার ক্লাস টিচার বা পাড়ার কেউ সবার সামনে ছেলেকে বা মেয়েকে বকাবকি করেন, মাথা নিচু করে শুনুন। কিন্তু সেখানেই ঝাঁপিয়ে পড়বেন না।
. প্রেম, যৌনতা, নেশার মতো নিষিদ্ধ বস্তুর হাতছানি আসবেই। তাই কীভাবে এড়িয়ে চলতে হয়, তা নিয়ে সন্তানের সঙ্গে খোলাখুলি আলোচনা করুন। পাশাপাশি এটাও নিজেকে বোঝান যে এর পরেও বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়।
. নিজে মনের দিক থেকে ভেঙে পড়বেন না। এমন ঘটনা ঘটলেই কারও জীবন শেষ হয়ে যায় না।
. সন্তান যেন নিজের সব হেরে যাওয়া বা অপরাধবোধের কথা আপনাকে মন খুলে বলতে পারে – সে খেয়াল রাখবেন।