. বাচ্চার সামনে কখনওই বলবেন না যে ‘বাবা, আমি অঙ্কে কী ভয় পেতাম’ বা ‘দূর, অঙ্ক সবার দ্বারা হয় না’ – এইসব বললেই ভয় ধীরে ধীরে জাঁকিয়ে বসে। হ্যাঁ, কিছু মানুষ প্রকৃতিগভাবে শৈল্পিক হয়, তারা অঙ্কের নম্বরের প্রতি ততটা আকর্ষণ অনুভব না-ও করতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে অঙ্ককে ভয় পেয়ে দূরে সরে যেতে হবে। অঙ্কে ভয় পাওয়াটা অনেকটা ড্যাম্পের মতো – দেওয়ালে একবার ধরলে চারিয়ে যাবে ভিতরে ভিতরে। গোড়া থেকেই এটা হতে দেবেন না।
. বাচ্চাকে অঙ্ক নিয়ে রোজ বসান। রো-জ। অঙ্ক নিয়ে ভাবতে দিন, প্রশ্ন করতে দিন। সে যদি আপনার সঙ্গে কিছু নিয়ে তর্ক জোড়ে, তা হলে আরও ভালো – কারণ ব্যাপারটা নিয়ে সে ভাবনাচিন্তা করছে। অঙ্ক শেখানোর জন্য যাঁরা প্রাইভেট টিউটরের সাহায্য নিচ্ছেন, তাঁরা বাচ্চার পাশাপাশি শিক্ষকের দিকেও নজর রাখুন। শিক্ষক আপনার বাচ্চাকে যদি বকাঝকা করেন, তা হলে কিন্তু সে আরও গুটিয়ে যাবে।
. অঙ্কের ধাঁধা, পাজল কিনে দিন। নানারকম মজাদার বই পাওয়া যায় – তার জন্য বিরাট টাকাও খরচ করতে হয় না। আর আজকাল ইন্টারনেটে অজস্র এরকম কনটেন্ট পাওয়া যায়। বাচ্চাকে সেগুলি দেখান, উৎসাহ দিন।
. সব বাচ্চা একভাবে শেখে না, এক সময়ে শেখে না। একদিনে নামতা মুখস্থ না হলে বকবেন না, রাগ করবেন না, শর্টকাট শেখাবেন না। তাকে সময় দিন। ব্যাপারটাকে এমন করে তুলুন যাতে পরেরদিন সে পড়াটা শুরু করার উৎসাহ পায়।
. আমরা বাচ্চাদের না পারাটাকে খুব হাইলাইট করি – সে যা যা পারে বা জানে, সেগুলোকে ধর্তব্যের মধ্যে আনি না। আপনাকে এই শৃঙ্খলটা ভাঙতে হবে। একটা অঙ্ক পরীক্ষায় শূন্য পেলেও টেনশন করবেন না, পরেরবারের পরীক্ষার প্রস্তুতিটা ভালোভাবে নিতে বলুন।
. অঙ্ক বইয়ের প্রতিটি অঙ্ক কষে ফেলতে হবে। এমনকী উদাহরণের অঙ্কগুলিও। কিচ্ছু বাদ রাখলে চলবে না। যত প্র্যাকটিস করবে বাচ্চা, তত বাড়বে তার আত্মবিশ্বাস, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রে তত বেশি অঙ্ক চেনা যাবে। অঙ্ক রোজ অভ্যেস করলে কেউ ভোলে না, প্র্যাকটিস করলে ভুলও এড়ানো যায়।
. পরীক্ষা নিয়ে অযথা আতঙ্ক সৃষ্টি করবেন না। সারা বছরের প্রতিটি দিন প্রস্তুতি নিতে হবে। পরীক্ষার আগে হুড়মুড় করে লাভ হবে না।
. অঙ্ক সম্পর্কে কোনও ভুল ধারণা রাখবেন না। অনেকেই ভাবেন, একটা বয়সের পর অঙ্ক শেখা যায় না। বা মেয়েরা অঙ্ক পারেন না। এ সব খুব ভুল ধারণা। ইতিহাস সাক্ষী দেবে, দেশে-বিদেশে অজস্র নারী অঙ্কে সুপণ্ডিত হয়েছেন।