বাংলাদেশের শাকিব আল হাসান ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অনন্য নজির গড়লেন একইসঙ্গে ৬০০০ রান আর ৩০০ উইকেটের মালিক হয়ে। টি২০, ওয়ান ডে ইন্টারন্যাশনাল এবং টেস্ট ক্রিকেট মিলিয়ে তিনি এই রেকর্ড কায়েম করেছেন। প্রতিশ্রুতিমান এই অলরাউন্ডার আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত ছিলেন বেশ কিছুদিন। সেই ব্যান ওঠার পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে সিরিজ খেলতে মাঠে নেমেছেন সদ্য। একটি দেশের হয়ে ব্যাটে-বলে এমন সাফল্য নজিরবিহীন।
বাংলাদেশের ক্রিকেট প্রেমী জনতার নয়নের মণি শাকিব আল হাসান কলকাতার দর্শকেরও খুব পছন্দের খেলোয়াড়। কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে তাঁর পারফরম্যান্সের কথা কে-ই বা ভুলতে পারেন! বাংলাদেশের এক নম্বর ম্যাচ উইনারও তিনিই – বারংবার নিজের অসাধারণ স্ট্রোক প্লে আর বিষাক্ত বোলিংয়ের মাধ্যমে সেটাই প্রমাণ করেছেন শাকিব।
এ হেন প্রতিভাবান ক্রিকেটারকে এক বছরের জন্য ব্যান করা হয়েছিল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে। ২০১৯ সালে আইপিএল চলাকালীন নাকি জুয়াড়িরা ম্যাচ ফিক্স করার জন্য শাকিবের দ্বারস্থ হয়েছিল বেশ কয়েকবার। তিনি এ তথ্য দলের প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের কানে তোলেননি।
পরবর্তীকালে তদন্তে প্রমাণিত হয় এর আগেও বেশ কয়েকবার শাকিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল বুকিরা, তিনি অনৈতিক কিছু করেননি – তবে কারও বিরুদ্ধে কোথাও অভিযোগও জানাননি। এই অপরাধের শাস্তি হিসেবেই আইসিসির তরফে তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত করা হয় দু’ বছরের জন্য – পরে অবশ্য এক বছরের শাস্তি মকুব করা হয়।
সেই নির্বাসন শেষ হয়েছে গত অক্টোবরে, তার পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেই ঘরের মাঠে নেমেছেন শাকিব। প্রথম ম্যাচেই পেয়েছেন ম্যান অফ দ্য ম্যাদের স্বীকৃতি, মাত্র ৪৪ বল আর ৮ রান ব্যয় করে তুলে নিয়েছেন ৪টি উইকেট। দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ জেতে সাত উইকেটে, তাঁর অপরাজিত ৪৩ রান আর দুই উইকেট হয়ে দাঁড়ায় ম্যাচ উইনার।
তবে তৃতীয় ম্যাচে আহত হয়ে মাঠের বাইরে যেতে হয়েছে তাঁকে, আঘাত বেশ গুরুতর। পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে হয়তো দু’টি টেস্টেই দলের বাইরে থাকতে হবে শাকিবকে। আপাতত নতুন মাইলস্টোন ছোঁয়াটা হয়তো পিছিয়ে গেল, কিন্তু এই বিধ্বংসী ফর্ম অব্যাহত থাকলে ক্রিকেটপ্রেমীরা হতাশ হবেন না! প্রসঙ্গত, ব্যক্তিগত জীবনেও নতুন অতিথির অপেক্ষায় রয়েছেন দুই সন্তানের পিতা – নতুন বছরের প্রথম দিনেই স্ত্রীর সন্তানসম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন তিনি!