লাকি আলি নামক এক গায়ক ছিলেন এবং তাঁর বেশ কয়েকটি সিঙ্গল গান ও মিউজিক ভিডিয়ো গত শতকের নয়ের দশকে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল – এ কথা কতজনের মনে আছে বলুন তো? কয়েকদিন আগেই কালো কুর্তা আর মাথায় ফেজ পরা এক সুফি সাধকের মতো দেখতে গায়ক গিটার বাজিয়ে ‘ও সনম মহব্বত কি কসম’ গাইছেন এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। বহু মানুষ সেটি শেয়ার করেন — খতিয়ে দেখার পর বোঝা যায় শিল্পীর পরিচয়। ফের প্রচারের আলোয় ফেরেন লাকি।
বলিউড তো বটেই, ভক্তরাও ভুলে গিয়েছিলেন দারুণ সুদর্শন এই গায়ককে। তবে ফেলে আসা নব্বইয়ে যাঁরা বড়ো হয়েছেন, তাঁরা লাকির ঈষৎ নেজাল টোনযুক্ত কণ্ঠস্বরের কথা বেশ মনে করতে পারবেন। সঙ্গে বাড়তি পাওনা ছিল দুর্দান্ত বিদেশি লোকেশনে শ্যুট করা মিউজিক ভিডিয়োগুলি।
ইন্ডি-পপের বাজার তখন চাঙ্গা, সদ্য দেশে এসেছে মিউজিক চ্যানেলের কনসেপ্ট। সেই হাওয়ায় গা ভাসিয়ে বেশ কিছু হিট গানও তৈরি করেন লাকি। তাঁকে কেন্দ্রে রেখে নির্মিত হয় ‘সুর’ নামের একটি হিন্দি ছবি। মোটামুটি ব্যবসা করে সেটিও। তার পর ধীরে ধীরে কাজ কমতে থাকে, বলিউড থেকে প্রায় হারিয়েই যান এককালের ডাকসাইটে কমেডিয়ান মেহমুদের এই পুত্র। গানবাজনা ছাড়েননি, কনসার্টও করতেন টুকটাক। তবে নতুন করে তাঁকে নিয়ে আগ্রহ তৈরি হবে, এমনটা হয়তো তিনি নিজেও ভাবেননি।
কথায় বলে, মেয়েদের মনের কথা তবু বোঝা যায়, কিন্তু সোশাল মিডিয়া কখন কাকে মাথায় তুলবে আর কাকেই বা ছুড়ে ফেলবে, তা বুঝে ওঠা দায়। হামাদ আল রেয়ামি নামক এক সৌদি চিত্র পরিচালক ও সমালোচক কয়েকদিন আগে লাকির সঙ্গে একটি লাইভ করেন ইনস্টাগ্রামে। সেই অনুষ্ঠানের একটি ভিডিয়ো নিজের পাতায় পরে শেয়ার করেন লাকি। ২.১০ সেকেন্ডের সেই ভিডিয়োর ভিউয়ারশিপ হু-হু করে বাড়তে থাকে, এই লেখার সময় পর্যন্ত তা প্রায় ২২ লক্ষ ছুঁতে চলেছে।
লাকির ইনস্টা পেজে এর আগে যে সব ভিডিয়ো আছে, তার দর্শক সংখ্যা বড়োজোর ৫০০-১০০০। হামাদ নিয়মিত কাজ করেন বলিউড ছবি ও তারকাদের নিয়ে, তাঁর পেজেও এত দর্শক আসেন না। স্রেফ নস্টালজিয়াই কি তাহলে এই বিপুল সংখ্যক মানুষকে টেনে আনল? তার উত্তর দেওয়া মুশকিল। আপাতত লাকির কেরিয়ারে এই আবেগের কোনও প্রভাব পড়ে কিনা সেটাই দেখতে হবে। তবে তিনি নিজে এই ঘটনার পর যে ক’টি সংবাদ্মাধ্যেমের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের প্রত্যেককেই জানিয়েছেন যে মূল স্রোতে ফেরার বিন্দুমাত্র ইচ্ছে তাঁর নেই।
ফোটো: ইনস্টাগ্রাম