খাবার আমাদের শরীরকে শক্তি জোগায়। আবার অতিরিক্ত খাবার শরীরকে অসুস্থ, দুর্বল করে তোলে। প্রবল অতিমারি আর দুঃসহ গরম – দুইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের দেওয়াল গড়ে তুলতে চাইলে আপনার প্রধান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে সুষম, পুষ্টিকর খাবার।
যাঁরা ওবেসিটিতে ভোগেন বা ওজন বেশি, তাঁদের এমনিতেই নানা বিপাকজনিত সমস্যা দেখা দেয় অল্প বয়সেই। শরীরের যা প্রয়োজন, তার চাইতে বেশি ক্যালোরি যদি লাগাতার তাকে জোগানো হয়, তা হলে একটা সময়ে বাড়তি গ্লুকোজ মেদ হিসেবেই সে জমিয়ে রাখবে। আর সেই অতিরিক্ত মেদ আপনাকে ভিতরে ভিতরে দুর্বল করে দেবে।
শরীর যখন কোনও অসুখের সঙ্গে লড়াই করে, তখন আমাদের খিদে পায় না। কেন বলুন তো? কারণ খাবার হজম করতে যে পরিশ্রমটা হয়, সেটা না করে অন্য জরুরি কাজে মন দিতে হয় শরীরকে। সে ক’টাদিন জমে থাকা মেদ ভাঙিয়েই চলে। এই যে খেলোয়াড়রা খুব কড়া ডায়েট মেনে চলেন, সেটাও ওই একই কারণে – শরীরে শক্তি আর এনার্জির ঘাটতি যেন না হয়। আবার বিপাক ক্রিয়ার হার কমলেও চলবে না। তাই সুষম, পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে।
. রোজের রান্না হতে হবে হালকা, একেবারে বেসিক। সকালে ছাতুর শরবত, চিড়ের পোলাও, উপমা, ডিম সেদ্ধ বা রুটি-তরকারি খেতে পারেন। ছানা আর ফলও চলবে। ভাত, ডাল, মাছের ঝোল, বাড়িতে পাতা টক দই পারফেক্ট লাঞ্চ। এক-আধ দিন আমের চাটনি চলতেই পারে।
. দুপুরে এঁচোড়, ঝিঙে, লাউ, পেঁপের মতো কোনও একটা মরশুমি সবজি রাখুন অবশ্যই। রাতে ছোলা, রাজমা বা সোয়াবিনের তরকারি আর রুটি খান। ভাত বা রুটির পরিমাণ হবে কম, ডাল, সবজি, ফল দিয়ে পেট ভরান। রান্না হবে খুব কম তেলে।
. মাছ, ডিম, চিকেন, ছানা, সোয়াবিন, ছোলা, রাজমা ইত্যাদি প্রোটিনের উৎস। টক দই বা দুধে প্রোটিনের পাশাপাশি ক্যালশিয়ামও মেলে। এগুলি ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে রাখুন খাদ্যতালিকায়। ফল খান। তরমুজ, বেল, শসা, জামরুল, পেয়ারা সব চলবে। আপনার আর্থিক সামর্থের বাইরে গিয়ে কিছু করার কথা বলছি না আমরা।
. কলমি, নটে, পুঁইশাকও খেতে পারেন, তবে খাওয়ার আগে ভালো করে ধুয়ে নেওয়া জরুরি।
. শরীর ঠান্ডা রাখুন। প্রচুর তেল-মশলায় জবজবে খাবার আপনার শরীরকে উত্তপ্ত করে তু্লবে ক্রমশ, বাড়বে ইনফ্ল্যামেশন। একই ফল হবে খুব বেশি মিষ্টি খেলেও। তাই বিরিয়ানি, চাইনিজ, রসমালাই, পেস্ট্রি, প্যাটিজ, চিপস কিছুদিনের জন্য মুলতুবি থাক।