কিছু কিছু খাবারের নাম শুনলেই সাধারণ মানুষ আঁতকে ওঠে – ভাবখানা এমন, যেন খেলেই হাসপাতালের বিছানায় স্থান হবে। আসলে কোনও খাবারকে ভিলেন বানানোর আগে আমাদের একটু চিন্তাভাবনা করা উচিত – সব কিছুরই নানা পুষ্টিগুণ থাকে। আমাদেরই কর্মকান্ডের ফলে তার কোনও কোনওটা ব্যাকফায়ার করে।
. মাটন
মাটন মানেই কোলেস্টেরল, কনস্টিপেশন, ইউরিক অ্যাসিড, স্যাচুরেটেড ফ্যাট আরও কত্ত কী! কিন্তু মাটন প্রোটিন আর আয়রনের খুব ভালো উৎসও বটে। তবে হ্যাঁ, লুচি বা পোলাও দিয়ে কষা মাংস খাওয়াটা একেবারেই স্বাস্থ্যকর নয়।
হালকা মাটন স্টু রান্না করুন, সঙ্গে সব সবজি দিন। সাদা ভাত বা হাতরুটির সঙ্গে খান – শরীরের লাভ হবে। খেয়ে উঠেই ঘুমিয়ে পড়বেন না আর বেশি চর্বিওয়ালা মাংস কিনবেন না। যেদিন মাংস খাচ্ছেন, সেদিন দুধ বা পায়েসের মতো গুরুপাক কিছু না খেতে পারলে ভালো হয় – ব্যস, কোনও সমস্যা নেই!
মাটন খাওয়ার আগে-পরে ফল খান বেশি করে, জলও খেতে হবে অন্যদিনের চেয়ে বেশি। তা হলে হজম বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও হবে না।
. আলু
হ্যাঁ, আলুতে প্রচুর শ্বেতসার থাকে, এটাও ঠিক যে ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, পোটেটো চিপস খুব খারাপ খাবার। কিন্তু পাশাপাশি আলুতে নানা ভিটামিন, মিনারেলও থাকে। আলু এনার্জির ভালো উৎসও বটে। আপনি যদি সেদ্ধ আলু খান বা খোসাসমেত আলু বেক করে মশলা ছড়িয়ে খেতে পারেন, তা হলে কোনও অসুবিধে নেই। খোসাসুদ্ধ আলুতে ফাইবারও থাকে অনেকটাই।
. গোরুর দুধ
যাঁরা ল্যাকটোজ বা কেসিন হজম করতে পারেন না, তাঁরা অবশ্যই গোরু বা মোষের দুধ থেকে দূরে থাকুন। কিন্তু আজকাল সবাই কারণ ছাড়াই সোয়া, আমন্ড মিল্কের দিকে ঝুঁকছেন – ভাবছেন এগুলি খেলে সুস্থ থাকা সহজ হয়। ব্যাপারটা আদৌ তা নয়।
‘প্ল্যান্ট বেসড মিল্ক’ বলে বাজারে যে সব সামগ্রী বিক্রি হয়, পুষ্টিগুণের দিক থেকে দেখলে দুধের সঙ্গে তার তুলনাই হতে পারে না। দুধের ক্যালশিয়াম, পটাশিয়াম, ভিটামিন ডি, প্রোটিনের কোনওটাই আপনি তার অল্টারনেটিভে পাবেন না। তা ছাড়া দুধ যদি তাজা আর হরমোন-মুক্ত হয়, তা হলে তাতে বাড়তি চিনিও থাকে না। জোগাড় করতে পারলে তাজা, ফ্যাটযুক্ত দুধ নিশ্চিন্তে খান – অতিরিক্ত পরিমাণে না খেলে কোনও অসুবিধেই হবে না।
. ডিম
ডিমে প্রচুর স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, বিশেষ করে কুসুম খেলেই বাড়ে ফ্যাট আর কোলেস্টেরল – এ সব বস্তাপচা ধারণা উড়িয়ে দিয়ে পুরো ডিম খান। ডিম প্রোটিনের খুব ভালো উৎস। তবে খেয়াল রাখবেন, সাধারণ মানুষের কিন্তু দিউনে ১০-১২টা ডিম লাগে না। যাঁরা বেহিসেবি খান, তাঁরা একবার ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।
. গম
যাঁদের গমের আটা খেলে গ্যাস বা পেট ফাঁপার সমস্যা আছে, তাঁরা ছাড়া বাকিরা কিন্তু গ্লুটেন বাদ দেবেন না। এর মধ্যে প্রচুর ফাইবার থাকে, না বুঝে তা বাদ দিয়ে দেওয়ার কোনও প্রয়োজন নেই।