ভারতীয় রান্নায় যে মশলাগুলি ব্যবহৃত হয়, তা আমাদের শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে একান্ত প্রয়োজনীয়। হ্যাঁ, এ কথা ঠিক যে অতিরিক্ত তেল-মশলার ব্যবহার কারও পক্ষেই ভালো হতে পারে না৷ কিন্তু নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় মশলা ব্যবহার করার অবশ্যই কিছু সুফল আছে৷ জেনে নিন কোন মশলা থেকে কী কী উপকার পাওয়া যায়৷
হলুদ: ইউরোপ, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, আফ্রিকা সর্বত্র গত কয়েক বছর ধরে অন্যতম জনপ্রিয় পানীয় হয়ে উঠেছে ‘গোল্ডেন লাতে’৷ এটি আমাদের চিরচেনা হলুদ দেওয়া দুধ ছাড়া আর কিছু নয় কিন্তু! হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন নামের যৌগটি অ্যান্টিঅক্সিডান্ট, অ্যান্টি ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটারি৷ এর ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা কমে, ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখা যায়, বাড়ে হজমশক্তি৷ যাঁরা পেট ফেঁপে ওঠার সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা উপকার পেতে পারেন হলুদ থেকে৷
এলাচ: এলাচ বাড়ায় মেটাবলিজ়মের হার৷ এর প্রভাবে পিত্তরস নিঃসরণের হার বাড়ে, মজবুত হয় হজমশক্তি৷ এটিও অ্যান্টিঅক্সিডান্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি, গলা-বুক জ্বালা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ডায়ারিয়া ও হজম সংক্রান্ত সমস্যায় তা খুব ভালো কাজ দেয়৷ এলাচের ভিটামিন সি আপনার প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, বাঁচায় সাধারণ সর্দি-কাশির হাত থেকে৷
দারচিনি: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ঠেকিয়ে রাখে আর্থারাইটিস, সর্দি-কাশির সঙ্গে লড়াইয়ের শক্তি জোগায়৷ ওজন কমাতে ও ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও দারচিনি অত্যন্ত কার্যকর৷
গোলমরিচ: খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি হজমশক্তি বাড়ায়৷ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে এর নিয়মিত ব্যবহার, হার্নিয়া, হৃদরোগ ও ডায়ারিয়া ঠেকাতেও সক্ষম৷
ধনে: হজমশক্তি বাড়ায়, নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা, ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ধনে একান্ত কার্যকর৷
জিরে: ডাযাবেটিস ও ইনসমনিয়া ঠেকাতে খুব ভালো কাজে দেয় জিরে৷ অর্শ সারাতেও তার কার্যকর ভূমিকা আছে৷ হজমশক্তিও বাড়ায় এই মশলাটি৷
মেথি: শরীর ঠান্ডা রাখতে মেথি খুব কার্যকর। যাঁদের পেট গরম হওয়ার সমস্যা আছে, তাঁরা সারা রাত্তির জলে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে জলটা ছেঁকে পান করুন। বেশ কিছুদিন এটা করার পর দেখবেন কমছে পেটের সমস্যা, সুন্দর হয়ে উঠছে ত্বক আর চুল। আপনার নারকেল তেলে মেথি মিশিয়ে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিয়ে ব্যবহার করুন, চুল ভালো থাকবে।
সরষে: সরষের ভিটামিন ই ত্বক আর চুল ভালো রাখার জন্য আদর্শ। রোজের রান্নায় সরষের তেল ব্যবহার করুন, অ্যালার্জির সমস্যা না থাকলে তা গায়েও মাখতে পারেন স্বচ্ছন্দে।