আপনার কি ধারণা, রান্নায় নানা ধরনের মশলা কেন দেওয়া হয়? হ্যাঁ, স্বাদ তো বাড়ে বটেই, তার পাশাপাশি মশলার আরও অজস্র গুণ আছে। প্রতিটি মশলার মধ্যেই থাকে এসেনশিয়াল অয়েল, তা দারুণ শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডান্ট। তা ফ্রি র্যাডিকালসের সঙ্গে লড়াই করে, আপনার কোষগুলিকে সুস্থ রাখে।
তবে হ্যাঁ, অতিরিক্ত তেল-মশলায় গরগরে করে রাঁধা খাবার খাওয়ার পরামর্শ আমরা দিচ্ছি না। হালকা মাছের ঝোল, স্টু, ডাল রান্নায় মশলা যেভাবে ব্যবহার হয়, সেটাই সবচেয়ে ভালো। সারা রাত ভিজিয়ে রাখা মৌরি বা জোয়ানের জল খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে।
গোলমরিচ: খাবারের স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি হজমশক্তি বাড়ায়৷ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি দিতে পারে এর নিয়মিত ব্যবহার, হার্নিয়া, হৃদরোগ ও ডায়ারিয়া ঠেকাতেও সক্ষম৷
আদা-রসুন: অরুচি, গা বমিভাব ঠেকাতে খুব কার্যকর দাওয়াই হচ্ছে আদা। আর রসুন ভালো রাখে হার্টের পেশির স্বাস্থ্য।
ধনে: হজমশক্তি বাড়ায়, নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে রক্তের কোলেস্টেরলের মাত্রা, ত্বক আর চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতেও ধনে একান্ত কার্যকর৷
জিরে: ডাযাবেটিস ও ইনসমনিয়া ঠেকাতে খুব ভালো কাজে দেয় জিরে৷ অর্শ সারাতেও তার কার্যকর ভূমিকা আছে৷ হজমশক্তিও বাড়ায় এই মশলাটি৷
মেথি: শরীর ঠান্ডা রাখতে মেথি খুব কার্যকর। যাঁদের পেট গরম হওয়ার সমস্যা আছে, তাঁরা সারা রাত্তির জলে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। সকালে জলটা ছেঁকে পান করুন। বেশ কিছুদিন এটা করার পর দেখবেন কমছে পেটের সমস্যা, সুন্দর হয়ে উঠছে ত্বক আর চুল। আপনার নারকেল তেলে মেথি মিশিয়ে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিয়ে ব্যবহার করুন, চুল ভালো থাকবে।
হলুদ: হলুদে উপস্থিত কারকিউমিন নামের যৌগটি অ্যান্টিঅক্সিডান্ট, অ্যান্টি ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি ইনফ্লামেটারি৷ এর ফলে আর্থারাইটিসের ব্যথা কমে, ক্যানসার ঠেকিয়ে রাখা যায়, বাড়ে হজমশক্তি৷ যাঁরা পেট ফেঁপে ওঠার সমস্যায় ভোগেন, তাঁরা উপকার পেতে পারেন হলুদ থেকে৷
এলাচ: এলাচ বাড়ায় মেটাবলিজ়মের হার৷ এর প্রভাবে পিত্তরস নিঃসরণের হার বাড়ে, মজবুত হয় হজমশক্তি৷ এটিও অ্যান্টিঅক্সিডান্ট ও অ্যান্টি ইনফ্লামেটরি, গলা-বুক জ্বালা, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, ডায়ারিয়া ও হজম সংক্রান্ত সমস্যায় তা খুব ভালো কাজ দেয়৷ এলাচের ভিটামিন সি আপনার প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, বাঁচায় সাধারণ সর্দি-কাশির হাত থেকে৷
দারচিনি: রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়, ঠেকিয়ে রাখে আর্থারাইটিস, সর্দি-কাশির সঙ্গে লড়াইয়ের শক্তি জোগায়৷ ওজন কমাতে ও ব্লাড সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতেও দারচিনি অত্যন্ত কার্যকর৷ তবে একগাদা কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার দারচিনি দিয়ে খেলেই কিন্তু আপনার সুগার কমবে না।
সরষে: সরষের ভিটামিন ই ত্বক আর চুল ভালো রাখার জন্য আদর্শ। রোজের রান্নায় সরষের তেল ব্যবহার করুন, অ্যালার্জির সমস্যা না থাকলে তা গায়েও মাখতে পারেন স্বচ্ছন্দে।