বাঙালির বাড়িতে এক কালে আশ্বিন মাস পড়তে না পড়তেই নাড়ু, মুড়ি, মোয়া, নিমকি বানানো শুরু হয়ে যেত। উৎসবের মরশুম, বাড়িতে আত্মীয়-বন্ধুদের আনাগোনা চলবে – এই অবস্থায় মুখ চালানোর জন্য কিছু না কিছু তো লাগবেই। উপরে যে ক’টি নাম বলা হল, সবগুলিই কিন্তু বেশ কিছুদিন রেখে খাওয়া যায়।
নাড়ু বানানো কিন্তু খুব কঠিন কাজ নয়। প্রয়োজন স্রেফ কোরানো নারকেল আর চিনি বা গুড়। সামান্য বড়ো এলাচদানা বা কর্পূর দিতে পারেন সুগন্ধের জন্য। ব্যস, আর কিচ্ছুটি লাগবে না! আর আজকাল তো সুপারমার্কেটে নারকেল কোরা বিক্রিই হয়!
আপনি কি নরম নাড়ু পছন্দ করেন, না শক্ত পাকের? নরম নাড়ু চাইলে নারকেল আর চিনির সঙ্গে খানিকটা কন্ডেনসড মিল্ক বা মিল্ক পাউডার মেশাতে পারেন। তার পর অল্প আঁচে পাক দিতে বসান। নাড়ু আঁচে বসিয়ে কিন্তু অন্য কাজ করা যাবে না, তাতে পাক লেগে যাবে তলায়। নাড়তে থাকুন ঘন ঘন। মিনিট কুড়ির মধ্যে জল মরে আসার কথা।
হাতে অল্প মিশ্রণ তুলে গোল পাকান। নিটোল আকার ধরলে বুঝবেন পুর রেডি। নামিয়ে গরম থাকতে থাকতে পাকিয়ে নিন গোল করে। পাকানোর আগে হাতে খাঁটি ঘি মাখিয়ে নিতে হবে। তাতে দারুণ সুগন্ধ যোগ হবে নাড়ুতে।
শক্ত নাড়ু থাকে বেশিদিন। তবে তার জন্য কোরা নারকেল প্রথমে মিক্সিতে একবার বেটে নিন, জল দেবেন না। তার পর গুড় বা চিনি মিশিয়ে বেশ খানিকক্ষণ রেখে দিন। প্রথমে একটু জল বেরোবে। এই অবস্থায় আঁচে বসান, এলাচদানা দিন। নেড়ে নেড়ে পাক দিতে হবে। কড়ার গা থেকে ছেড়ে এলে বুঝবেন পুর রেডি। নামিয়ে গোল করে পাকিয়ে নিন।
কাচের শিশিতে ভরে রেখে দিলে বেশ কিছুদিন থাকবে। ভালো মানের আখের গুড় ব্যবহার করুন নাড়ু তৈরির সময়ে। গুড়ের নাড়ুর উপর একেবারে শেষে খানিকটা চিনি ছড়িয়ে দিতে পারেন।
নাড়ু পাকাতে দেরি করবেন না কিন্তু, তা হলে ভালো শেপ আসবে না। এই একইভাবে নারকেলের জায়গায় ক্ষীর আর চিনির পাক দিয়ে দারুণ সুন্দর ক্ষীরের নাড়ু বানানো যায়। তার উপর অল্প বাদাম কুচি ছড়িয়ে দিলে তো আর কথাই হবে না!