বাচ্চার স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলার দায়িত্বটা মা–বাবাসহ বা পরিবারের সবার। ছোটো থেকে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলা দরকার, সে চাইলেই চিপস, কেক, পেস্ট্রি ইত্যাদি দেবেন না যখন তখন। তবে সব কিছুর উপর রাতারাতি বিধিনিষেধ চাপিয়ে দিলে চলবে না, ধীরে ধীরে পরিবর্তন নিয়ে আসুন রোজের খাদ্যতালিকায়৷
অনেক বাচ্চার সকালে উঠতেই এত দেরি হয়ে যায় যে তারা কিছুই না খেয়ে স্কুলের ক্লাস শুরু করে দেয়৷ ঘুম থেকে ওঠার এক ঘণ্টার মধ্যে সকলকে কিছু না কিছু খেতেই হয়, তা না হলে ঘাটতি আসবে এনার্জি লেভেলে৷ দুধ, মুড়ি, কলা, সাধারণ কর্নফ্লেক্স, চিড়ের পোলাও বা জ্যাম-পিনাট বাটার স্যান্ডউইচ — কিছু একটা খাইয়ে তবেই ক্লাস শুরু করান। তার আগে নির্দিষ্ট সময়ে ওঠা অভ্যেস করাতে হবে।
বিকেলের স্ন্যাক্স নিয়েও অল্পবিস্তর ভাবনাচিন্তা করা দরকার৷ সব রকম সবজি মেশানো উপমা দিতে পারেন৷ চিকেন বা ডিমসেদ্ধ দেওয়া স্যান্ডউইচও ভালো লাগে খেতে৷ স্যান্ডউইচ স্প্রেড তৈরির জন্য মেয়োনিজ়ের বদলে বাড়িতে পাতা দই সারা রাত ঝুলিয়ে রেখে জলটা বের করে দিন৷ তার পর সামান্য নুন-মিষ্টি, সরষের গুঁড়ো বা কাসুন্দি, রসুন, ধনেপাতাকুচি মিশিয়ে ডিপ তৈরি করে নিন৷ শুকনো করে নেওয়া ঘুগনি বা ছোলাও দেওয়া যায়৷ ছানা, ডিম বা চিকেনের পুর দিয়ে রুটি বা সামান্য তেলে সেঁকা পরোটার রোলও করে দিতে পারেন৷ তা ছাড়া ফলও খুব ভালো অপশন।
খাবার সুস্বাদু করে তোলার জন্য সামান্য নুন–গোলমরিচ–চিনি–লেবুর রস বা জিরে–ধনে–গরম মশলা শুকনো তাওয়ায় ভেজে গুঁড়ো করে মেশান৷ খাবারে অতিরিক্ত তেল, চিনি বা নুন থাকলে কিন্তু শিশুর জিভে সেটাই অভ্যেস হয়ে যাবে, তখন সে আর হালকা-সহজপাচ্য খাবার খেতেই চাইবে না৷
প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, ফ্যাট, ভিটামিন, মিনারেল সব থাকা দরকার৷ দুধ বা ছানা, প্রসেস না হওয়া চিজ়, দই ইত্যাদিও খাওয়াতে হবে৷ কোনও পরিস্থিতিতেই ‘আপেলটা খেয়ে নাও, তা হলে চকোলেট দেবো’ বলবেন না, তা হলে সেটাতেই অভ্যেস হয়ে যাবে৷
মরশুমি ফলের রস, ফুল ফ্যাট মিল্ক বা ইয়োগার্ট দিয়ে দারুণ আইসক্রিম বানানো যায় বাড়িতেই৷ কোল্ড কফি বা মিল্ক শেক বানানোও সহজ৷ বাইরে গিয়ে এগুলো খাওয়ানোর বদলে ঘরেই বানিয়ে ফেলুন, দরকারে বাচ্চাকেও সঙ্গে নিন৷ কেক-কুকিজ়ও বাড়িতে বানাতে পারলেই ভালো হয়, কারণ তা হলে আপনি রেসিপিগুলিকে স্বাস্থ্যকর করে তুলতে পারবেন৷ বাড়তি চিনি বা ময়দার বদলে মধু, ড্রাই ফ্রুট, আমন্ডের ময়দা দিয়ে কেক-বিস্কিট বানানো সম্ভব৷
আজকাল বাচ্চাদের মনপসন্দ খাবার স্বাস্থ্যকর পদ্ধতিতে বানানোর জন্য অজস্র অ্যাপ ও রান্নার বই আছে৷ হাতের কাছে তেমন কিছু রাখলেও সুবিধে হবে৷