আপনার চকোলেট খেতে ভালো লাগে, কিন্তু খাওয়ার পরেই অস্বস্তি শুরু হয়? মনে হয়, ডায়েটের বারোটা বাজল? দেখুন, ভালো চকোলেটের অনেক গুণ আছে, তবে তা নিয়ন্ত্রিত পরিমাণে খেতে হবে। রোজ বাজার থেকে ফেরার সময় আপনি চকোলেট কেক কিনে আনবেন বা সস্তা চকোলেট বারে কামড় বসাবেন – তা হলে কিন্তু হবে না!
ভারতের ছোটোখাটো দোকানেও যে সব চকোলেট সাধারণত পাওয়া যায়, তাতে আবার পুষ্টিগুণ খুঁজতে যাবেন না! ১০-১২ টাকায় পুষ্টির জোগান দেওয়া সম্ভবও না। খুব একটা ভালো মানের কোকো ব্যবহার করা হয় না তাতে, স্বাদের অনেকটাই সিন্থেটিক এবং প্রচুর চিনি মেশানো থাকে।
তবে সুবিধের দিকটা হচ্ছে, আজকাল প্রচুর সংস্থা চমৎকার চকোলেট তৈরি করে। ভালো জায়গা থেকে ডার্ক চকোলেট কিনুন – তার মধ্যেই লুকিয়ে আছে নানা গুণ৷ বেশ কিছু সংস্থা সেরা বাগান থেকে সিঙ্গল ওরিজিন কোকো বিন কিনে চকোলেট তৈরি করেন, একটু চেষ্টা করলেই সেগুলি খুঁজে পাবেন, অনলাইনে অর্ডার দিয়েও আনানো যায়৷ তবে হ্যাঁ, দাম বেশি পড়বে। মাঝে মাঝে খেলে গায়ে লাগার কথা নয়।
চকোলেট নাকি হৃদরোগের আশঙ্কা এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত কমিয়ে দিতে পারে৷ দিনে যদি দু’ টুকরো ডার্ক চকোলেট খাওয়ার অভ্যেস থাকে, তা হলে কমতে পারে রক্তচাপ৷ এর মধ্যে উপস্থিত ফ্ল্যাভোনয়েডস খুব শক্তিশালী অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট৷
রাতারাতি কিন্তু মিল্ক চকোলেট থেকে ডার্ক চকোলেটের স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে ওঠা যায় না, বরং গোড়ার দিকে এর অত্যধিক তিতকুটেভাব আপনাকে বিরক্ত করতেই পারে৷ উলটে স্বাদ বদলের জন্য অন্য মিষ্টিই খেতে আরম্ভ করবেন হয়তো!
ধীরে ধীরে ক্রমশ বেশি কোকোযুক্ত চকোলেটের দিকে ঝুঁকুন, যেন চিনি আর দুধের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে৷ হোয়াইট চকোলেট বলে যে বস্তুটি পাওয়া যায়, তাতে কিন্তু কোনও পুষ্টিগুণই নেই!
ডার্ক চকোলেটের একটি বারে যে পরিমাণ ফ্ল্যাভোনয়েডস থাকে, তা নাকি পাঁচটি আপেলের সমান৷ এর উপস্থিতিতে রক্তে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে, তবে অতিরিক্ত চিনি মেশানো মিল্ক চকোলেটে এই গুণগুলি পাবেন না৷
কোকো মস্তিষ্কে রক্ত সংবাহনের পরিমাণ বাড়ায়, তাতে বাড়ে মানুষের বুদ্ধি৷ মুড ভালো করতেও এর জুড়ি নেই৷ দক্ষিণ আমেরিকায় প্রাচীনকালে তো ডায়ারিয়া বা পেটের কোনও সমস্যায় ওষুধ হিসেবে চকোলেটের ব্যবহার হত, কারণ ক্ষুদ্রান্ত্রের নিঃসরণ নিয়ন্ত্রণেও নাকি চকোলেটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে৷
তার চেয়েও বড়ো কথা হচ্ছে, গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে একবার ডার্ক চকোলেট খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে আপনি অন্যান্য মিষ্টি জাতীয় খাবারের প্রতি আগ্রহ হারাবেন এবং শরীরে চিনি কম ঢুকবে ও স্বাভাবিকভাবেই ওজন কমতে আরম্ভ করবে৷