কাটলেট খেতে ভালোবাসেন না, এমন মানুষ এ জগতে নিশ্চয়ই আছেন – কিন্তু সুখের বিষয় হচ্ছে, আমরা তাঁদের চিনি না।
উলটে আমাদের কাছে এমন একটি কাটলেটের রেসিপি আছে, যা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারলাম না! রেসিপিটি একেবারে প্রমাণিত এবং পরীক্ষিত – আমরা নিজেরা বানিয়ে এবং খেয়ে খুব আমোদ পেয়েছি বলেই আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়া।
আর হ্যাঁ, আমরা চিকেন কাটলেট বলে শুরু করেছি বটে, চাইলে কিন্তু আপনি মাটন কিমা দিয়েও এ পদ রাঁধতে পারেন। তবে মাটন লেবুর রস দিয়ে ম্যারিনেট করলে স্বাদ মরে যায়। সেক্ষেত্রে আপনাকে কালো ভিনিগার বা কাঁচা পেঁপে বাটার সাহায্য নিতে হবে।
পেঁপের রস মাটনের তন্তুকে নরম করে দেবে, কিন্তু পরিমাণ বেশি হয়ে গেলে কিমা একেবারে মিহি হয়ে যাবে। তাই ২৫০ গ্রাম কিমায় ১/২ চাচামচ পেঁপেবাটার বেশি দেবেন না – খুব বেশিক্ষণ রাখলেও কিন্তু মাংসের স্বাদে ফারাক আসে। আমাদের পরামর্শ হচ্ছে, বাকি সব মশলা মাখিয়ে মাংস ঘণ্টা দুই রাখুন। খাওয়ার ঘণ্টাখানেক আগে পেঁপেবাটা বা পেঁপে কুরে ছেঁকে নেওয়া রসটা মাংসে মেশান। আধ ঘণ্টার মধ্যে কাটলেট গড়ে নিন। আরও আধ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখলে শেপ এসে যাবে। তার পর ভেজে পরিবেশন করুন।
কাটলেটের সঙ্গে কী দেবেন? খোসা সমেত আলু ভালো করে ধুয়ে চারভাগ করে নিন। গাজর লম্বা ফালি করে কাটুন, কড়াইশুঁটি আর বিনস নিতে পারেন। এগুলি স্টিম করে নিন। তলায় গরমজল ফুটবে গভীর পাত্রে, উপরে ছাঁকনি বা ঝাঁঝরি গোছের কিছু একটা রাখুন। তার উপর সবজি দিয়ে জল ছাড়া ভাপান। খেতে দেওয়ার আগে এটা মাখনে সামান্য রসুনকুচি দিয়ে টস করে নিন। মিক্সড হার্ব বা পার্সলে থাকলে সেটাও দিতে পারেন। টোম্যাটো অর্ধেক করে ফ্রাই প্যানে দিয়ে সেঁকে নিন।
একটা সহজ সসও বানানো যায় – দই থেকে জল ঝরিয়ে নিন – ২৪ ঘণ্টা ছাঁকনিতে রাখতে পারলে সব চাইতে ভালো হয়। এরপর সামান্য চিনি, নুন, চিলি ফ্লেক্স দিয়ে দইটা ফেটিয়ে নিন। পেঁয়াজকুচি যোগ করুন, সামান্য শসাও দিতে পারেন। আর রাখুন মাস্টার্ড সস বা কাসুন্দি। ব্যস, আপনি রেডি।
কাটলেটের জন্য চাই
মাংসের কিমা (৩০০ গ্রামে মাঝারি আকারের গোটা ছয়েক হবে)
আদা-রসুন-ছোটো ঝাঁঝালো পেঁয়াজ-কাঁচালঙ্কা-ধনেপাতা একসঙ্গে বাটুন
ভিনিগার বা লেবুর রস
নুন-গোলমরিচ
সামান্য কর্নফ্লাওয়ার
বিস্কিটের গুঁড়ো
ডিম
কীভাবে বানাবেন
কিমার মধ্যে মশলাগুলি মিশিয়ে নিন। লেবুর রস বা ভিনিগার, নুন-মরিচ মেশান।
তার পর এই মিশ্রণটাকে হাত দিয়ে ভালো করে মাখতে হবে, অন্তুত মিনিট দুয়েক তো লাগবেই।
তার পর যদি মনে হয় চিকেন জল ছাড়ছে, তা হলে অল্প কর্নফ্লাওয়ার মিশিয়ে মাখুন।
বেশি কর্নফ্লাওয়ার স্বাদ মেরে দেবে। অনেকে বিস্কিটের গুঁড়ো মেশান, তাতে কাটলেট শক্ত হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
মিশ্রণটা এমন হবে যাতে কাটলেটের শেপ দেওয়া যায়। একটা ডিম মেশাতে পারেন। তাতে বাঁধুনি আসে ভালো।
এই মিশ্রণটা আধ ঘণ্টা ফ্রিজে রাখতে হবে, তাতে শেপ ভালো আসবে।
এবার বের করে কাটলেটের শেপ দিন। টিয়ার ড্রপ, ডায়মন্ড, গোল – যেটা ম্যানেজ করতে পারবেন সেই আকারে কাটলেট গড়ে প্লেটে রাখুন।
ডিমের গোলা তৈরির জন্য ডিম, অল্প কর্নফ্লাওয়ার, নুন, মরিচ মিশিয়ে নিন।
কাটলেট এই মিশ্রণে ডুবিয়ে বিস্কিটের গুঁড়ো মাখিয়ে অন্তত মিনিট দশেক রাখুন।
ডুবো তেলে সোনালি করে ভাজুন। মাঝারি আঁচে তেল থাকে যেন তা দেখবেন, না হলে কাটলেটের ভিতর পর্যন্ত রান্না হবে না।
- চিকেন কাটলেট একটু তাত বসিয়ে খাবেন। তেল থেকে কাটলেট তুলেই তাতে ছুরি বসাবেন না।