শীতকালের সঙ্গে কিছু খাবারের একেবারে অঙ্গাঙ্গী যোগ আছে। যেমন ধরুন নলেন গুড়। গুড় উঠলে তবেই মোয়া হবে, সন্দেশ, রসগোল্লার তার পৌঁছে যাবে শিল্পের স্তরে। তার পর আছে গাজরের হালুয়া – শীতের লাল গাজর ছাড়া তার স্বাদ খুলবেই না। কড়াইশুঁটির কচুরি আপনি সারা বছর খেতেই পারেন, কিন্তু শীতকালে তা যতটা সুস্বাদু হবে, তেমনটা সারা বছর পাবেন না। ফুলকপির পুর দেওয়া শিঙাড়া, ভেটকি মাছের ফ্রাই, ডিম ভরা পারশে – লিস্ট বিরাট লম্বা করা যায় চাইলেই!
তবে শীতের সেরা ননভেজ পদটি হচ্ছে নিহারি। সারা রাত ঢিমে আঁচে রান্না হয় হাড়সমেত মাংসের টুকরো, প্রাতরাশে রুটি বা পরোটার সঙ্গে তা খেয়ে কাজে যান শ্রমিকরা। ভোর থেকে খিদিরপুর, মেটিয়াবুরুজের দোকানে ল-ম্বা লাইন পড়ে নিহারি খাওয়ার জন্য। কিন্তু যাঁরা কলকাতায় থাকেন না, তাঁরা কী করবেন? তাঁদের জন্য আমরা দারুণ একটি রেসিপি হাজির করেছি – সেটা ট্রাই করে দেখলেই হবে!
মাটন নিহারির রেসিপি
উপকরণ
২০০ মিলি তেল
৬টি লবঙ্গ
৮টি এলাচ
১ গ্রাম জৈত্রী
৩টে স্টার অ্যানিস
২টেবিলচামচ আদা-রসুন বাটা
১ কেজি খাসির কাঁধের মাংস
স্বাদ অনুযায়ী নুন
১চাচামচ শুকনো আদার গুঁড়ো
১ চাচামচ মৌরি গুঁড়ো
২০০ গ্রাম দই
২০০ গ্রাম তাজা টোম্যাটোর পিউরি
১০০ গ্রাম পেঁয়াজ বাটা
১ টেবিলচামচ দেগি মির্চ পাউডার
১ টেবিলচামচ ধনেগুঁড়ো
নিহারি মশলার উপকরণ
৫টি স্টার অ্যানিস
১০টি লবঙ্গ
১ চাচামচ জিরে
১৫টি ছোট এলাচ
২০ গ্রাম ময়দা
২০ গ্রাম বেসন
২০ গ্রাম ভাজা পেঁয়াজ
৫ গ্রাম সরু সরু করে কুচনো আদা
৫ গ্রাম কাঁচালঙ্কার কুচি
৫ গ্রাম ধনেপাতা
৫ গ্রাম গরম দুধে ভেজানো জ়াফরান
পদ্ধতি
একটি পাত্রে তেল দিন৷
গোটা মশলা আর আদা রসুন বাটা ছাড়ুন৷
মাংস, দই, নুন, টোম্যাটো পিউরি, পেঁয়াজবাটা, দেগি মির্চ, ধনে গুঁড়োটাও মিশিয়ে দিন এর সঙ্গে৷
খুব ভালো করে ভাজা ভাজা করুন, মশলার কাঁচা গন্ধটা কাটলে জল দিয়ে রান্না হতে দিন৷ কষা হয়ে গেলে মাংস সেদ্ধ হওয়ার মতো জল দিয়ে ঢাকা দিয়ে রাখুন কম আঁচে।
নিহারির জন্য যে মশলাগুলোর কথা বলা হয়েছে, সেটা একসঙ্গে শুকনো তাওয়ায় ভেজে গুঁড়িয়ে নিতে হবে৷
মাংস সেদ্ধ হয়ে এলে এই মশলার তিন টেবিলচামচ মাংসে মেশান৷ আরও জল দিন৷
এবার বেসন আর ময়দা জলে গুলে একটা মিশ্রণ তৈরি করুন এবং সেটা গ্রেভিতে ঢেলে দিন৷
ফুটে ফুটে গ্রেভিটা গাঢ় হয়ে আসবে৷
একেবারে শেষে উপর থেকে ভাজা পেঁয়াজ, কাঁচালঙ্কার কুচি, ধনেপাতাকুচি, জ়াফরান, আদার কুচিটা ছড়িয়ে দিন৷
নামিয়ে গরম গরম পরিবেশন করুন৷ সঙ্গে বাখরখানি রুটি বা লাচ্ছা পরোটা থাকলে তো কথাই নেই!