সবজির মধ্যে নানা ধরনের পুষ্টিগুণ থাকে, তা পেট ভরিয়ে রাখে অনেকক্ষণ। তাই যাঁরা ডায়াবেটিসে ভুগছেন, বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছেন তাঁদের সকলের রোজের খাদ্যতালিকাতেই সবজি থাকা উচিত। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে রান্না করলে সবজির এই পুষ্টিগুণ পূর্ণ মাত্রায় বজায় রাখা সম্ভব?
একদল বলবেন, সবজি কাঁচা খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। এ কথাটা আংশিক সত্য – শসা, টোম্যাটো, পেঁয়াজ, ধনেপাতা, পুদিনাপাতা এসব তো স্যালাডে খাওয়া হয়ই। শীতের টাটকা বিট, মুলো বা গাজরও কাঁচা খাওয়া যায়। অনেকে জ্যুস বানিয়ে পালং শাক, লাউ, করলা ইত্যাদিও খান। তবে দেখা গিয়েছে যে কাঁচার চাইতে রান্না করা সবজি অনেক বেশি পুষ্টির জোগান দেয় শরীরে।
রান্না করা সবজির কোষগুলি আগুনের তাপে নরম হয়ে যায়, তা হজম করা সহজ হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে রান্না করা গাজরে কাঁচা গাজরের চাইতে বেশি বিটা ক্যারোটিন থাকে। তবে কখনওই খুব বেশিক্ষণ রান্না করবেন না, চড়া আঁচে বেশি সময় থাকলে সবজির খাদ্যগুণ নষ্ট হয়।
অনেকেই সেদ্ধ সবজি খাওয়ার উপর জোর দেন – বয়স্ক ও শিশুদের জন্য সেদ্ধ আনাজ খুব ভালো। অল্প নুন-মরিচ দিয়ে খেলে হাইপারটেনশন বা ডায়াবেটিস রোগীরও কোনও অসুবিধে হওয়ার কথা নয়। পেঁপে, ঢেঁড়শ, পটল, আলু, ব্রকোলি, গাজর সবই এভাবে খেতে পারেন। একান্ত মুখে না রুচলে অল্প তেল, নুন, কাঁচা লঙ্কা ও পেঁয়াজকুচি মিশিয়ে মেখে প্রথম পাতে খান। সেদ্ধ করার সময় বেশি জল দেবেন না, আর দিলেও বাড়তি জল ফেলে না দিয়ে ডাল বা ঝোলে মিশিয়ে দিন। স্ন্যাক্স হিসেবেও সেদ্ধ আনাজের অপশন রাখা যায়।
সবজি ভাপিয়ে খাওয়া সবচেয়ে ভালো। একটি পাত্রে টগবগিয়ে জল ফোটান, তার উপর সচ্ছিদ্র কোনও বাসনে কাটা সবজি দিয়ে ভাপিয়ে নিন। জলের সংস্পর্শে না এলে পুষ্টিগুণ আনাজের মধ্যেই থাকবে। চড়া আঁচে সাঁতলে নিন তারপর। লাউ বা পেঁপে রান্নার সময়ে অল্প আঁচে নুন আর সামান্য চিনি দিয়ে সবজি ছেড়ে দিন – নিজের জলেই তা সেদ্ধ হয়ে যাবে। তারপর সহজেই লাউ ঘণ্ট বা পেঁপের ডালনা বানিয়ে নেওয়া সম্ভব। স্টার অ্যানিস, সোয়া সস, গোলমরিচ, ভিনিগার দিয়ে ক্যাপসিকাম, মাশরুম, পেঁয়াজ, ব্রকোলি স্টার ফ্রাই করেও খেতে পারেন।