আপনি নারী হোন বা পুরুষ, সংসারী হোন বা একা – খেতে তো হবেই! রোজ বাইরের খাবার খেলে পকেট হালকা হবে, ভালো থাকবে না শরীর। তাই প্ল্যান করে এগোন। এমনভাবে রান্না করুন বা করান যাতে খরচ কম হয়। আর্থিক অবস্থা যাই হোক না কেন, অপচয় বন্ধ করতে না পারলে কিন্তু পরে কোনও একটা সময়ে মুশকিলে পড়বেন।
রান্নাঘরে খুব বেশিক্ষণ সময় না কাটিয়েও কিন্তু খুব স্বাস্থ্যকর ও সুস্বাদু খাবার খাওয়া সম্ভব। তার জন্য সবার প্রথম যেটা দরকার তা হল সঠিক প্ল্যানিং। আগে থেকে ভেবে ফেলুন কী খাওয়া হবে, বাড়ির সবার সঙ্গে বসে সেটা ঠিক করলে ভালো হয়। তাতে খাবার নষ্ট হবে না।
আপনি যদি নাগরিক হিসেবে সচেতন হন এবং পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে চান, তা হলে খাবার নষ্ট করবেন না একেবারেই। খাবার উৎপাদনে প্রচুর জল লাগে। খাবার নষ্ট মানে কিন্তু জল নষ্ট করা। এমনভাবে রান্না করুন যাতে কিছু ফেলতে না হয়। রান্নার উপযোগী সব উপকরণ হাতের কাছে রাখুন।
প্ল্যানিং আর বাজার
মরশুমি সব শাকসবজি, মাছ, ফল কিনুন বাজার থেকে। তা ধুয়ে-মুছে ফ্রিজে এমনভাবে রাখুন যাতে নষ্ট না হয়। মাছ-মাংস আর আনাজপাতি একসঙ্গে রাখবেন না। জিপলক ব্যাগ হাতের কাছে রাখলে সুবিধে হবে। ছুটির দিনে মশলা বেটে রাখতে পারেন, তাতে বাজার থেকে কেনা ভেজাল মশলা খাওয়ার চাপ থাকবে না।
জলখাবার
সকাল আর বিকেলে দুটো জলখাবার লাগে সাধারণত। চেষ্টা করুন একবার ফল আর কোনও একটা সবজি সেদ্ধ খাওয়ার। ব্রকোলি/ পেঁপে/ কড়াইশুঁটি/ গাজর/ বিন সেদ্ধ করে নুন-লেবুর রস মিশিয়ে খাওয়া যায়। সেই সঙ্গে ডিম সেদ্ধ, ছানা, ছোলা সেদ্ধ, মাখানা খেতে পারেন।
প্যানকেক বা গোলা রুটির একটা কনসেপ্ট সারা দুনিয়াতেই আছে, তেমন কিছু ট্রাই করতে পারেন। প্যানকেকের বেস তৈরি হয় দুধ, ডিম আর ময়দা দিয়ে। ইচ্ছে হলে আটা বা ওটসের গুঁড়ো দেওয়া যায়। তার পর ভাজা হয় মাখন দিয়ে। চিল্লার বেস তৈরি হয় বেসন, সুজি আর দইয়ের ঘোল দিয়ে, উত্তপম বানানো হয় সুজি-দই/ চাল-ডাল বাটা দিয়ে। তার পর ওমলেটের মতো ভেজে নিলেই হবে। আগের রাতে চাল-ডাল বেটে রেখে দিয়ে দক্ষিণীরা ইডলি ও দোসাও তৈরি করেন।
যদি মনে হয় এত ঝামেলা পোষাবে না রোজ, তা হলে হাতের কাছে রাখুন দুধ/দই আর যে কোনও দানাশস্য। সেটা কর্নফ্লেক্স, ওটস, মুড়ি, চিড়ে যা হোক হতে পারে। সঙ্গে আপেল, কলা, খেজুরের মতো কিছু রাখতে পারেন। মাঝে সাঝে পাউরুটি-অমলেটও চলতে পারে।
দুপুরের খাবার
আমরা যে আবহাওয়ায় থাকি, তাতে ভাত হজম করা সুবিধেজনক। চাল আগে থেকে ভিজিয়ে রাখলে রান্নাও হয় ঝটপট।। তার বাড়তি জলটুকু শরীরের কাজে লাগে। সঙ্গে ডাল রাখুন, তাতে বেশ কিছু সবজি দিয়ে দিন। খিচুড়ি রান্না করা যায়। ভাতের সঙ্গে নানা সবজি মিশিয়ে কড়ায় নেড়ে নিলে ফ্রায়েড রাইস হয়ে যাবে। সঙ্গে মাছ, মাংস খেতে পারেন। খানিকটা স্যালাড রাখতে পারলে আরও ভালো হয়।
ডিনার
রাতের খাবার হালকা রাখুন, তাতে সুগার আর মেদ দুটোই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সুবিধে হবে। ডাল-রুটি/ভাত-তরকারি হলেই চলবে। রাতের বেলা লুচি-পরোটা বা মশলাদার মাংস ইত্যাদি না খাওয়াই ভালো, তাতে হজমের গোলমাল হতে পারে।