প্লাস্টিক যে বিষতুল্য – এ ব্যাপারে আমাদের কারওই কোনও সন্দেহ নেই। তাই যেনতেন প্রকারে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর চেষ্টা করছি আমরা সবাই। কিন্তু বদলে যাঁরা কাগজের কাপ, প্যাকেজিং, বাসনপত্র বা অন্য নানা উপাদান হাতে তুলে নিচ্ছেন, তাঁদের কয়েকটি বিষয় জানা উচিত।
বই, নোটবুক, খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন, বাচ্চাদের বইপত্র, খাতা, বাথরুমের টয়লেট পেপার, রান্নাঘরের ন্যাপকিন, মুখ মোছার ভেজা টিস্যু, খাবারের দোকানের বাহারি কাগজের বাক্স, প্লেট, গ্লাস, নানা প্রডাক্টের প্যাকেজিং — কী পরিমাণ কাগজ আমরা রোজ ব্যবহার করি ভেবে দেখেছেন কখনও?
. সারা পৃথিবীতে প্রতি বছর মোট যত গাছ কাটা হয়, তার ৪০ শতাংশ খরচ হয় কাগজ নির্মাণে। বছরে ধ্বংস হয় ৩০ মিলিয়ন একর বনভূমি। বাসস্থান হারায় অজস্র পশুপাখি।
. একটি এ ফোর কাগজ তৈরি করতে ১০ লিটার জল প্রয়োজন। এই হারে জল খরচ হতে থাকলে আগামী ১৮-২০ বছরের মধ্যে টান পড়বে পৃথিবীর মিষ্টি জলের সঞ্চয়ে। কাগজ ও কাগজের মণ্ড তৈরির বিকল্প কোনও ব্যবস্থা না হলে এই পরিমাণ জলের খরচ ঠেকানো যাবে না।
. কাগজ তৈরিতে লাগে গাছ, গাছ কাটলে পরিবেশে অক্সিজেনের মাত্রা কমে। কাগজ যদি পুড়িয়ে পচে মাটিতে মেশে, তা হলে তা থেকে মিথেন গ্যাস বেরোয়। আর তা পোড়ালে বের হয় কার্বন ডাই অক্সাইড। দুটোই গ্রিন হাউজ গ্যাস এবং পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়ায়।
. বই আর খবরের কাগজ তৈরি করতে বছরে ১০০ মিলিয়ন গাছ দরকার লাগে। তা উৎপাদনের সময়ে বিপুল পরিমাণ গ্রিন হাউস গ্যাস বাতাসে মেশে।
. তাই বারবার কাগজের ব্যবহার কমানোর অনুরোধ করা হচ্ছে। একান্ত প্রয়োজন না পড়লে প্রিন্ট নেবেন না, লেখার সময়েও বাচ্চাকে কাগজের ব্যবহার কমানোর অনুরোধ করুন।
. কাগজের শপিং ব্যাগ ব্যবহার করার অভ্যেস আছে? পুনর্ব্যবহারযোগ্য কাগজে তৈরি ব্যাগ অবশ্য খুব একটা খারাপ অপশন নয়, তবে চেষ্টা করুন নিজের কাপড়ের ব্যাগ সঙ্গে রাখার। তাতে জিনিসপত্র ভরে কেনাকাটির কাজ সারুন।
.অফিশিয়াল কাজকর্মের জন্য ডিজিটাল ফরম্যাটে ভরসা রাখার কথা ভাবতে পারেন। তাতে আপনার তথ্য সুরক্ষিত থাকবে, নিয়ন্ত্রণে থাকবে কাগজের ব্যবহারও।
.বেড়াতে যাচ্ছেন? কাগজে তৈরি ইউজ অ্যান্ড থ্রো কাটলারি ব্যবহার করার বদলে সঙ্গে রাখুন স্টিলের বাসন। খাওয়াদাওয়ার পর নিজেরটা নিজে ধুয়ে নিলেই হবে!