এক কথায় উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ পারে। কোনও ভ্যাকসিনই ১০০ শতাংশ কার্যকর হয় না, তাই ভ্যাকসিন নিলেই যে অসুখকে আপনি পাকাপাকিভাবে হারিয়ে দিতে পারবেন, তার কোনও গ্যারান্টি নেই। এবার প্রশ্ন হচ্ছে, তা হলে ভ্যাকসিন নিয়ে এত মাতামাতি করার বা আশাবাদী হওয়ার কি আছে?
এই তো পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান গত ১৮ মার্চ কোভিড ভ্যাকসিন নিয়ে মিডিয়ায় হাস্যমুখ ছবি দিলেন। ২০ তারিখেই জানা গেল যে তাঁর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। ফলে সাধারণ মানুষও একটু দ্বিধায় পড়েছেন – হচ্ছেটা কী?
খেয়াল রাখবেন, কোভিডের লক্ষণ প্রকাশ পায় শরীর ভাইরাসের সংস্পর্শে আসার বেশ কিছুদিন পর। তাই ইমরান যখন ভ্যাকসিন নিয়েছেন, তার অনেকদিন আগেই তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে রোগ, ভ্যাকসিন কিন্তু কাজ দেখানোর সময়ই পায়নি।
তা ছাড়া ভ্যাকসিন কীভাবে কাজ করবে, তার একটা নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। একটি ইজরায়েলি গবেষণাকে উদ্ধৃত করে ফোর্বস পত্রিকা জানিয়েছে, প্রথম ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যে কারও সংক্রমণ হতেই পারে। বিজ্ঞানের পরিভাষায় একে বলে ‘ব্রেক থ্রু কেস’। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর প্রাপকদের অন্তত ৬০-৮০ শতাংশের কোভিড হওয়ার চান্স থাকে। তবে আশার কথা হচ্ছে, এঁদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ হলেও তা কখনওই খুব কঠিন অসুখের চেহারা নেয় না।
মনে রাখতে হবে যে আজ যে সব ভ্যাকসিন বাজারে আছে, তার সবগুলিই গত বছর যে ভ্যারিয়ান্টটি কার্যকর ছিল, তার উপর ভিত্তি করে ডিজাইন করা হয়েছে। এবার আপনি যদি একেবারে অন্য কোনও মিউটেটেড স্ট্রেনের কবলে পড়েন, তা হলে কী হবে আগে থেকে বলা মুশকিল।
অথবা ধরুন আপনার শরীরে ভাইরাল লোডের পরিমাণ খুব বেশি হল, তখন কিন্তু ভ্যাকসিন সেই অর্থে কাজ করবে না। সেই সঙ্গে এটাও কিন্তু ঠিক যে শরীর কিন্তু টিকার দৌলতে করোনা ভাইরাসের সঙ্গে পরিচিত হয়ে যাবে।
ব্রেক থ্রু কেস কমানোর সবচেয়ে সহজ রাস্তা হল ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও সতর্ক থাকা। মাস্ক ব্যবহার করুন, ভিড় এড়িয়ে চলুন। অনেক মানুষ স্পর্শ করেছেন এমন কোনও সারফেস ব্যবহার করলে হাত স্যানিটাইজ করে নিন। সাবধানতার কোনও বিকল্প নেই।
সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, যে ক’টি ভ্যাকসিন এখন বাজারে আছে, তার সব ক’টিই ৯০-৯৫ ভাগ সাফল্যের নজির গড়েছে। তাই কোনও কারণেই ভ্যাকসিন থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা উচিত নয়।