এ দেশে এখনও পর্যন্ত পরীক্ষার নামে ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে কুঁকড়ে থাকে – অকৃতকার্য হওয়ার আশঙ্কায় আত্মহত্যার ঘটনাও নেহাত কম ঘটে না। কীভাবে পরীক্ষার চাপ কমানো যায়, তা নিয়ে নানা স্তরে গবেষণা চলছে অনেকদিন ধরেই।
সম্প্রতি সিবিএসই পরীক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর জন্য বিভিন্ন সংস্কারের পরিকল্পনা করেছে। চেষ্টা করা হচ্ছে ছাত্রছাত্রীদের চাপ কমানোর। মুখস্থবিদ্যের বদলে এমন শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যা রোজের জীবনে তাদের কাজে লাগবে।
. সিবিএসই বোর্ডের পরীক্ষার্থীরা তাদের প্রাপ্ত নম্বর আরও ভালো করার জন্য ‘স্কোর ইমপ্রুভমেন্ট এগজামিনেশন’ দিতে পারবে একই বছরে। এ বছর, অর্থাৎ ২০২১ শিক্ষাবর্ষে যারা পরীক্ষা দেবে, তারা একটি বিষয়ের নম্বর বাড়ানোর সুযোগ পাবেন। আগামী দিনে একাধিক বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়া যাবে।
. কোনও বিষয়ে অকৃতকার্য হলে কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষাও দেওয়া যাবে ওই বছরেই। সে পরীক্ষায় পাশ করার অর্থ হচ্ছে পরীক্ষার্থীর অমূল্য একটি বছর নষ্ট হল না।
. দশম শ্রেণীর অঙ্ক পরীক্ষা হবে দুই ভাগে। যারা অঙ্কে দুর্বল বা একটু পিছিয়ে পড়া, তারা বেছে নিতে পারে ‘বেসিক’ শীর্ষক প্রশ্নপত্র। বাকিদের জন্য থাকছে ‘স্ট্যান্ডার্ড’ পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ। সারা দেশে বহু ছাত্রছাত্রী অঙ্কের ভয়ে কাবু হয়ে থাকে। সহজ প্রশ্ন পেলে তাদের নিশ্চিতভাবেই সুবিধে হবে।
. ছাত্রছাত্রীরা কী শিখল তা জেনে নেওয়ার পদ্ধতিতেই বদল আনতে চাইছে বোর্ড। এতদিন যে পদ্ধতি ছিল, তাকে বলা হয় কনটেন্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং। ব্যাপারটা এবার কনসেপ্ট আন্ডারস্ট্যান্ডিং ও সাধারণ জ্ঞান কতটা, তা বোঝার দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বাচ্চা কতটা মুখস্থ করেছে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। সে কী শিখল, তা বোঝার জন্য কম্পেটেনসি বেসড প্রশ্নের সংখ্যা বাড়ানো হবে। বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা না থাকলে এ ধরনের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সম্ভব নয়। ২০২৫-এর মধ্যে প্রশ্নপত্রের ৫০-৬০ শতাংশেই এই ধরনের প্রশ্ন থাকবে।
. পরীক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর প্রস্তুতি চলছে। প্রতিটি বাচ্চা নিজের মতো করে শেখে, আপনার বাচ্চা কীভাবে কতটা শিখতে পারছে, তার একটা পরিষ্কার হিসেব থাকবে অভিভাবক ও স্কুল, দু’ তরফের কাছেই।
. রেজাল্ট নয়, গুরুত্ব পাবে হোলিস্টিক প্রোগ্রেস কার্ড। যে কোনও পড়ুয়া নিজেই খুঁজে পাবে তার জোর আর দুর্বলতার জায়গাগুলোকে। ফলে পরবর্তী জীবনে কোন ক্ষেত্রে পড়াশোনা করা উচিত তা বুঝতে সুবিধে হবে।
. গোড়ায় নিচু ক্লাসে হোলিস্টিক প্রোগ্রেসের আইডিয়া কাজে লাগানো হবে, ধীরে ধীরে তা উঁচু ক্লাসেও লাগু হবে। তার আগে ছাত্র, অভিভাবক, শিক্ষক সবার জন্যই বিশেষ ওয়ার্কশপের ব্যবস্থা করা হবে।