সবে ঘুরে দাঁড়াতে আরম্ভ করেছিল দেশ-বিদেশের পর্যটন শিল্প, ১৫ ডিসেম্বর থেকেই আন্তর্জাতিক বিমান চলাচল স্বাভাবিক হওয়ার কথা। ট্যুরিস্ট স্পটগুলো ধীরে ধীরে লাভের মুখ দেখতে আরম্ভ করেছিল – সব কিছুর উপরে ফের কালো ছায়া ফেলেছে কোভিডের নয়া ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রনের দ্রুত প্রসার।
বিশ্বের অনেকগুলো দেশে করোনা ভাইরাসের এই উন্নততর ভ্যারিয়ান্টের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে সমস্তরকম বিমান যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েও ইউরোপ, আমেরিকা রক্ষা পায়নি, ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যেও পৌঁছে গিয়েছে এই নয়া স্ট্রেন। এর হাত থেকে বাঁচার জন্য কি তাহলে ফের ঘরবন্দি হতে হবে?
. এ প্রশ্নের উত্তর এখনই দেওয়া সম্ভব নয়। ওমিক্রনের স্পাইক প্রোটিন প্রায় ২৫টি মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে – এটুকু জানা যাচ্ছে। কিন্তু তাতে ভাইরাসের ক্ষমতা বেড়েছে কিনা, তা টিকার বেড়াজাল সহজে ভেদ করতে পারছে কিনা তা এখনও বোঝা যাচ্ছে না। WHO এর চিকিৎসা সংক্রান্ত কোনও নির্দেশিকা জারি করেনি এখনও – এই অবস্থায় খানিকটা সময় পাওয়া গেলে বিজ্ঞানীদের সুবিধে হবে – তাই একান্ত প্রয়োজন না হলে এখনই ভ্রমণ বন্ধ রাখুন।
. অনেকে ভাবছেন, টিকা নেওয়া থাকলে আর কোনও ভয় নেই। তাঁরা পুরোটা ঠিক ভাবছেন না। টিকা ভাইরাসের যে স্পাইক প্রোটিনের সঙ্গে লড়াই করার জন্য তৈরি হয়েছিল, তার তুলনায় অনেকটাই বদলেছে পরবর্তী ভ্যারিয়ান্টগুলির স্পাইক। টিকা নিশ্চিতভাবেই খানিকটা প্রতিরোধ খাড়া করছে, কারণ ওমিক্রনের প্রভাবে সংক্রমণের খবর যতটা শোনা যাচ্ছে, মৃত্যুর সংখ্যা সে তুলনায় অনেকটাই কম। এইটা নিঃসন্দেহে আশার কথা।
. তবে নিজের সুরক্ষার জন্যই মাস্ক পরুন, হাত ধুয়ে ফেলুন বা স্যানিটাইজ করুন বারবার। বাইরে থেকে ফিরে আসার পর জামাকাপড় ধুয়ে ফেলুন, বাড়িতে বাইরের কেউ এলে সমস্ত সারফেস স্যানিটাইজ করে নেওয়া দরকার। ভিড় এড়িয়ে চলুন।
. অনেকেই কোভিডে নিকটজনকে হারিয়েছেন। তাঁরা ফের আর একটি স্ট্রেন উদয় হওয়ায় রীতিমতো আতঙ্কিত। চিন্তা করবেন না – কোভিড যখন শুরু হয়েছিল, তখনকার চাইতে রোগের সঙ্গে লড়াইয়ের এখন আমরা অনেক বেশি প্রস্তুত। নানা ওষুধ বেরিয়েছে, টেস্ট করানো অনেক সহজ হয়েছে এখন। তাই অহেতুক আতঙ্কিত হওয়া অর্থহীন। জ্বর এলে সময় নষ্ট না করে বা নিজের ইচ্ছেমতো ওষুধপত্র না খেয়ে ডাক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।
. মনে রাখবেন, ওমিক্রন যে ডেল্টার চাইতে বেশি ছোঁয়াচে – তা এখনও প্রমাণ হয়নি। তাছাড়া সেকেন্ড ওয়েভ যখন এসেছিল, তখন ভ্যাকসিনেশনের হার ছিল কম। এখন আমাদের সুরক্ষাকবচ তার চাইতে বেশি শক্তিশালী। আগামী একটা মাস খুব সাবধানে থাকা দরকার, তার মধ্যেই সমস্যার তীব্রতা অনেকটা কমে যাবে বলে আশা করা যায়।