তবে থেকেই যবে থেকে প্যানডেমিক শুরু হয়েছে, মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গিয়েছে গার্হস্থ্য হিংসা – এ কথা বারবার বলছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পরিবারের সব সদস্য যখন বাড়িতে রয়েছেন, তখনই সবচেয়ে বেশি আঘাত নেমে আসছে বাড়ির মেয়েদের উপর – এর ভুরি ভুরি প্রমাণ আছে।
সাম্প্রতিক যে ঘটনা আলোড়ন তৈরি করেছে, তা হলে র্যাপার ও গায়ক হনি সিংয়ের স্ত্রী শালিনী তলোয়ার সিংয়ের অভিযোগ। হনি তাঁর স্ত্রীয়ের সঙ্গে কিছুদিন আগেই বিবাহিত জীবনের দশম বর্ষপূর্তি উদযাপন করেছেন। এই ভ্যালেন্টাইনস ডেতেও স্ত্রীয়ের সঙ্গে ছবি দিয়েছেন ইনস্টাগ্রামে। হঠাৎ কী হল?
শালিনী পুলিশকে যে বয়ান দিয়েছেন, তা থেকে জানা গিয়েছে ২০১১ সালে বিয়ের পর থেকেই তাঁর গায়ে হাত তুলতেন হনি। বিয়ে ও মধুচন্দ্রিমার ছবি প্রকাশ্যে আনায় তাঁকে বেধড়ক মারধোর করা হয়েছিল, হনির বাবা মাদকাচ্ছন্ন অবস্থায় তাঁকে যৌন হেনস্থা করেছেন। হনি স্ত্রীয়ের সামনেই একাধিক মহিলার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়েছেন। প্রতিবাদ করলেই শালিনী শ্বশুরবাড়ির সবার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। আপাতত তিনি বিরাট টাকা খোরপোষ চেয়ে মামলা করেছেন।
অনেকে বলবেন, এই মহিলা এতদিন চুপ করে ছিলেন কেন? আশ্চর্যজনকভাবে, গার্হস্থ্য হিংসার ভিকটিমদের অনেকেই এভাবে চুপচাপ থাকেন, মেনেও নেন সবকিছু। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এঁরা বাপের বাড়িতে ফিরে যাওয়ার পরিস্থিতিতে থাকেন না – শালিনীই দাবি করেছেন যে তিনি কোনও কাজ করেন না এবং তাঁর বিধবা ন্মায়ের পক্ষে তাঁর খরচ চালানো অসম্ভব। অনেকে বাচ্চাদের আর্থিক নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে দিতে চান না বলে দাঁতে দাঁত চেপে সব সহ্য করেন।
. মনে রাখবেন, একবার গার্হস্থ্য হিংসা শুরু হলে তা থামে না। আপনি যত চুপ থাকবেন, অত্যাচারীর সাহস কিন্তু তত বাড়বে।
. আপনার শরীরে আপনার ইচ্ছের বিরুদ্ধে কেউ হাত দিতে পারে না। একটা আঘাত মাফ করলে ফের একটা নেমে আসবে। অন্য মানুষটিকে ক্ষমা করে দিয়ে রেহাই পাবেন কিনা সন্দেহ আছে।
. যে কোনও আর্থ-সামাজিক অবস্থানে গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হতে পারেন কোনও মহিলা। এমন নয় যে কেবল সমাজের একেবারে উঁচু বা নিচু স্তরেই এমনটা দেখা যায়।
. যদি আপনার বান্ধবী, সহায়ক, বোন, পরিচিত কেউ গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ আনেন, তাঁর পাশে দাঁড়ান। তাঁকে মানিয়ে চলার পরামর্শ দিলে ভুল করবেন। কীভাবে তাঁকে সেই পরিস্থিতি থেকে বের করে আনা যায়, সেই চেষ্টা করুন।
. গার্হস্থ্য হিংসার সঙ্গে মাদকাসক্তি মিশলে কিন্তু মারাত্মক জায়গায় যেতে পারে সমস্যা। খুন বা আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটলে কিন্তু আফসোসের শেষ থাকবে না।
. যিনি গার্হস্থ্য হিংসার শিকার হয়েছেন, তাঁর ডিপ্রেশন হওয়া বিচিত্র নয়। যদি কোনও বাচ্চা দিনের পর দিন চোখের সামনে হিংসা দেখে, তা হলে তারও কাউন্সেলিং দরকার নিয়মিত।