এমন দুর্যোগ গত একশো বছরে দেখেনি মানুষ, এভাবে দোর আটকে এক অজানা ভাইরাস ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টাও করেনি। অতিমারির কোপে আমরা অনেক কিছুই হারিয়েছি, তবে পাকাপাকি ক্ষতি করে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে একটিই – ঘুম। হ্যাঁ, নির্ভার, নিশ্চিন্ত ঘুম হারিয়েছেন এ পৃথিবীর বহু মানুষ।
মার্চের ১৯ তারিখ সারা বিশ্ব জুড়ে পালিত হয় ঘুম দিবস বা স্লিপ ডে। এ বছর এই দিবসকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সব স্তরেই, কারণ গত এক বছরে ঘুমের সমস্যা নিয়ে ডাক্তারের দ্বারস্থ হয়েছেন বহু মানুষ – সমীক্ষা বলছে অন্তত ২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে ইনসমনিয়া।
তার কারণ হিসেবে মানসিক চাপ, অসহায়তা, কোয়ারেন্টাইনে আইসোলেটেড হয়ে থাকার আতঙ্ক, দুশ্চিন্তা, রোগের ভয়াবহতা, দীর্ঘক্ষণ অনলাইন থাকার মতো নানা বিষয়কে দায়ী করা হয়েছে। লকডাউনের সময়ে যে রাতজাগা শুরু হয়েছিল, জীবন স্বাভাবিক খাতে ফেরার পরও তা স্বাভাবিক হয়নি।
যদি রাতের বেলা আপনি গ্যাজেট ব্যবহার করেন, তা হলে তার থেকে নিঃসৃত ব্লু লাইটের প্রভাবে বারোটা বাজবে ঘুমের। দিনের পর দিন ভালো ঘুম না হলে আপনার হরমোনের স্তরে পরিবর্তন আসবে। সকালে ঝরঝরে লাগবে না, মেজাজ খারাপ হয়ে থাকবে। কাজের সময়ে ঝিমুনি আসবে। বাড়বে ব্লাড সুগার, ওবেসিটি, যখন তখন অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছে হবে।
এগুলো এড়াতে চাইলে আপনাকে আজ থেকেই সতর্ক হতে হবে। বাড়িতে থেকে যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা লক্ষ করলেই বুঝবেন যে আপনি কাজের সময়ে নানা দিকে মন দিচ্ছেন বা বাড়ির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন বলেই আগের থেকে অনেক বেশি সময় দিতে হচ্ছে অফিসে। এটা পালটানোর চেষ্টা করুন। তা ছাড়া ভালো ঘুমের জন্য কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত।
. ঘুমোতে যাওয়ার সময় নির্দিষ্ট হওয়া উচিত, রোজ এক সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টাও করতে হবে।
. রাতে খুব ভারী খাবার খাবেন না, তাতে ঘুম আসতে দেরি হয়।
. অতিরিক্ত মদ্যপান বা ধূমপান করলে কিন্তু ঘুমের অসুবিধা বাড়বে।
. রাতে বেশি জল খাবেন না, বাথরুমে যাওয়ার জন্য ঘুম চটকে গেলে মুশকিল।
. দিনে একবার অন্তত খানিকটা সময় হাঁটাচলা করতেই হবে – এর কোনও বিকল্প নেই।
. দুপুরে ঘুম পায়? ৪৫ মিনিটের বেশি দিবানিদ্রার অভ্যেস থাকলে ছাড়ার চেষ্টা করতে হবে।
. মোবাইল নিয়ে বিছানায় যাবেন না, তাতে ঘুমের বারোটা বাজবে।
. ঘুমোনোর আগে ১০ মিনিট বিছানায় বসেই মেডিটেশন করুন, নির্ভার নিদ্রা বাঁধা!