দিয়েগো মারাদোনার প্রয়াণের শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি তাঁর ভক্তরা, কিন্তু পরিবার ও কাছের মানুষজন মাঠে নেমে পড়েছেন তাঁর অতুল বৈভবের অংশীদারি বুঝে নিতে। একের পর এক মামলা দায়ের হচ্ছে, তাঁর আইনি পরামর্শদাতাদের মতে, এর অনেকগুলি মিটতে বহু বছর লেগে যেতে পারে!
এই সমস্যার মূল কারণ একটাই, মৃত্যুর আগে কোনও উইল করে যাননি এই বিশ্বখ্যাত ফুটবলার। তাঁর ব্যক্তিজীবন ছিল রঙিন, বিবাহবিচ্ছিন্না স্ত্রীর দুই কন্যা ছাড়াও আরও ছয় সন্তানকে বৈধ বলে তিনি স্বীকৃতি দিয়েছিলেন জীবদ্দশাতেই। তাঁরা ছাড়াও আরও বেশ কয়েকজন তাঁর সন্তান হওয়ার দাবি জানিয়ে নেমে পড়েছেন মাঠে। সূত্রের খবর, এঁদের সবার দাবির সত্যতা প্রমাণ করতে গেলে হয়তো কবর খুঁড়ে দিয়েগোর ডিএনএ বের করতে হবে! আছেন তাঁর প্রেমিকা বলে নিজেকে দাবি করা বেশ কয়েকজন মহিলা। দিয়েগোর ভাই ও ভাইপোরাও দাবি ছাড়তে রাজি নন।
এবার দেখা যাক, ঠিক কত সম্পত্তি আছে ফুটবলের রাজপুত্রের নামে। মারা যাওয়ার সময়েও মারাদোনা আর্জেন্টিনার প্রথম সারির এক ক্লাবের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কোচ হিসেবে। আর্জেন্টিনা ছাড়াও স্পেন, ইতালি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, বেলারুশ আর মেক্সিকোতে তিনি খেলা বা কোচিংয়ের সূত্রে বসবাস করেছেন কোনও না কোনও সময়ে। সর্বত্রই ছড়িয়ে আছে তাঁর সম্পদ, পেয়েছেন বহু দামী গাড়ি, ধনরত্ন, বাড়ি। এ ছাড়া আছে স্পনসরশিপবাবদ পাওয়া অর্থ। তাঁর সংগ্রহে থাকা প্রতিটি জার্সি ও বুট অমূল্য – তা বিক্রি করেও প্রচুর অর্থ রোজগার হবে। সব মিলিয়ে অন্তত ৫,০০,০০০ মিলিয়ন ডলারের হিসেব বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে আপাতত।
দুবাইয়ের ফুয়াইরা ফুটবল ক্লাবের টেকনিকাল ডিরেক্টর থাকাকালীন বেশ কয়েকটি বহুমূল্য গাড়ি উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন দিয়েগো, তার মধ্যে ছিল দু’টি অত্যাধুনিক স্মার্টকার। বেলারুশের একটি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে উপহার দেওয়া হয়েছিল একটি HUNTA ওভারকামার অ্যাম্ফিবিয়াস ট্যাঙ্ক – যা স্থল আর জলে সমান স্বাচ্ছন্দ্যে চলে। এগুলি তো নিলামে উঠবেই, পাশাপাশি দিয়েগো মারাদোনার ইমেজের দামও হবে আকাশছোঁয়া।
আপাতত তাঁর বৈধ সন্তানরা নিজেদের মধ্যে একটা বোঝাপড়ায় আসতে চাইছেন যাতে বাকি দাবিদারদের থেকে নিজেদের প্রাপ্য সুরক্ষিত রাখা যায়। ৬০ বছর বয়সে আচমকা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার বেশ কিছুদিন আগেই তাঁর এক প্রাক্তন প্রেমিকার বিরুদ্ধে সম্পত্তি নয়ছয়ের অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন – সে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি এখনও। সব মিলিয়ে যা পরিস্থিতি তাতে একটা কথাই বলা যায়, মরেও শান্তি পেলেন না দিয়েগো মারাদোনা!