বিশ্বের সবচেয়ে বড়ো ইলেকট্রিক গাড়ি নির্মাণকারী সংস্থা টেসলা পা রাখল ভারতের বাজারে, বেঙ্গালুরুতে খুলল তাদের রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট উইং। এর পর সক্রিয় হয়ে উঠবে সেলস আর মার্কেটিং বিভাগ, তার পর একটা সময়ে শুরু হবে গাড়ির উৎপাদন – এমন সম্ভাবনার কথাই জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গড়কড়ি। ফলে বেশ কিছু কর্মসংস্থানও হবে।
বিগত বেশ কিছুদিন ধরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলে আসছেন, দেশের পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যাটারিচালিত গাড়ি চালু করা একান্ত প্রয়োজনীয়। এখনও পর্যন্ত ভারতের বাজারে ইলেকট্রিক গাড়ির দাম বেশ বেশি, টেসলা কর্তৃপক্ষও তাঁদের ব্লগে স্বীকার করে নিয়েছেন যে এখনই এ দেশের বিপুল মধ্যবিত্ত জনতার কথা ভেবে গাড়ি নির্মাণের পরিকাঠামো গড়ে তোলা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে ধীরে ধীরে ব্যবসা বাড়ানোর পরিকল্পনা রয়েছে এবং মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশসহ মোট পাঁচ রাজ্যের সঙ্গে কথাবার্তাও চলছে – সেখানে অফিস, শোরুম, প্রোডাকশন ইউনিট গড়ে তোলা হতে পারে। তার আগে এই অত্যাধুনিক গাড়ি উচ্চবিত্তদের নাগালেই থাকবে।
ব্যাটারিচালিত গাড়ি গোটা দেশে ব্যাপক হারে চালু করার আগে গড়ে তুলতে হবে পরিকাঠামো। প্রচুর সংখ্যায় চার্জিং স্টেশন যতদিন না গড়ে উঠছে, ততদিন রাস্তায় ইলেকট্রিক গাড়ি বের করা মুশকিল। এমনিতে ইলেকট্রিক গাড়িকে তিনটি গোত্রে ভাগ করা যায় – ১. ব্যাটারি ইলেকট্রিক গাড়ি, যেখানে ব্যাটারির মধ্যে ইলেকট্রিসিটি স্টোর করা থাকতে পারে, ২. হাইব্রিড, যার মধ্যে ডিজেল ইঞ্জিন আর ইলেকট্রিক মোটর ও রিচার্জেবল ব্যাটারি দুই’ই থাকে ৩. ফিউল সেল ভেহিকল যেখানে হাইড্রোজেন মলিকিউল থেকে ইলেকট্রন আলাদা করে ইলেকট্রিসিটি তৈরি করা হয় এবং তার বলেই গাড়ির মোটর চলে।
গাড়ি আর ট্রাকের ধোঁওয়ার কারণে যে দূষণ হয়, তার হাত থেকে বাঁচাতে পারে একমাত্র ব্যাটারি বা ইলেকট্রিক চালিত গাড়ি। তাই ভবিষ্যতের বাহন এবং ‘সবুজ যান’ হিসেবে তার জনপ্রিয়তা বাড়ছে ধীরে ধীরে। বায়ুদূষণের পরিমাণ কমলে একটা সময়ে কমতে আরম্ভ করবে নানা শ্বাস-প্রশ্বাসের অসুখও। অনেকে বলেন, ইলেকট্রিসিটি তৈরি করতে গিয়েও বায়ুদূষণ হয়। তবে পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে তার পরিমাণ নিশ্চিতভাবেই ডিজেল বা গ্যাসোলিনের তুলনায় কম।
এই মুহূর্তে ভারতের বাজারে বেশ কয়েকটি ইলেকট্রিক গাড়ি আছে। তার মধ্যে মধ্যবিত্তের পকেটসই গোটা পাঁচেক গাড়িও রয়েছে। মারুতি সুজুকির ওয়্যাগন আর-এর ইভি ভার্সনের দাম ৮ লক্ষের কাছাকাছি। তবে টাটা মোটর্সের H2X মাইক্রো এসিইউভি বাজারে এসে গেলে মোটামুটি ৫.৫-৬ লক্ষের মধ্যেই পাওয়া যাবে। মহীন্দ্রার eKUV100-র দাম পড়ে ৮.২৫ লক্ষ। টাটা মোটর্সের অল্ট্রোজ বাজারে আসবে খুব শিগগির, তার দাম পড়বে মোটামুটি ১০ লক্ষ টাকা। আর ১৩ লক্ষ টাকায় পাওয়া যাবে XUV300-র ইলেকট্রিক ভার্সন।