সাধারণ গৃহস্থের পকেটে রীতিমতো আগুন লেগেছে গত কয়েকমাসে – সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে গেলে রোজ যা যা লাগে, সব কিছুর দামই বেড়েছে। তার মধ্যেও সবচেয়ে এগিয়ে আছে কোনগুলি জানেন?
১. জ্বালানি
পেট্রোল, ডিজেল, রান্নার গ্যাস – কাকে ছেড়ে কাকে দেখবেন? আর পেট্রোল, ডিজেলের দাম বাড়ার সঙ্গে যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সমস্ত পণ্যের দাম বাড়ার সরাসরি যোগ আছে, তা তো সবাই জানেন। রান্নার গ্যাসের দাম আপাতত ১০০০ টাকা ছাড়িয়েছে, আগামী কিছুদিনের মধ্যে তা আরও মহার্ঘ্য হয়ে উঠতে পারে। তার ফলে রেস্তোরাঁয় খাবারের দাম বাড়াটা স্রেফ সময়ের অপেক্ষা।
২. ফলমূল, শাকসবজি
সমস্ত কাঁচা বাজারের দাম কিলোপ্রতি ২০-৫০ টাকা বেড়েছে। আলুর দামটাই তার প্রথম উদাহরণ – সাধারণ আলুর বাজারদর ৩০ টাকা ছাড়িয়েছে – পুজোর পর নতুন আলু ওঠার কথা। ততদিনে দাম কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, কেউ জানে না। কিছু ব্যবসায়ীর ধারণা, কোল্ড স্টোরেজ থেকে আলু বেরোলে হয়তো দাম খানিক কমতে পারে। গত বছর শীতকালে অতি বৃষ্টি হয়েছে, তার ফলে মার খেয়েছে ফলন। এখনও ভালো পাতিলেবু নেই বাজারে – সপ্তাহখানেক আগেই তা বিকিয়েছে ২০০ টাকা কিলো দরে। ফলের অবস্থাও তথৈবচ। কারণ সমস্ত কিছুই বাজার পর্যন্ত বয়ে আনার খরচ অনেকটাই বেড়েছে।
৩. ওষুধ
ভারতের ড্রাগ প্রাইসিং অথরিটির তত্ত্বাবধানে এপ্রিল থেকেই ব্যথার ওষুধ, অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টি ইনফেকটিভ, ভিটামিন, মিনারেল, স্টেরয়েডের মতো ওষুধের দাম বেড়েছে অন্তত ১০-১১%। মনে রাখতে হবে, ওষুধের দাম গত দু’-তিন বছর ধরে ধীরে ধীরে বাড়ছে। তার উপর এই ১১% যোগ হওয়ার পর ক্ষেত্রবিশেষে ১৩০% বাড়তি পয়সা গুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে বয়স্ক নাগরিকদের অবস্থা খারাপ, তাঁদের সঞ্চয়ের একটা বড়ো অংশ ব্যয় হয় ওষুধ আর ডাক্তারের পিছনে। আপাতত এ সমস্যার কোনও সুরাহা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
৪. গাড়িভাড়া
গাড়িভাড়া যে কতটা বেড়েছে, তা এখনও পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে না, তার কারণ সরকারের তরফে পরিবহন ক্ষেত্রে ভাড়ার নতুন তালিকা প্রকাশিত হয়নি এখনও। তাই বাস, অটো/ টোটো, ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব যেমন ইচ্ছে তেমনই ভাড়া হাঁকছে আর সাধারণ মানুষ নাজেহাল হচ্ছেন। রাস্তায় বাস-ট্যাক্সি বেরোচ্ছে কম, ফলে যাতায়াত ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। হাতে সময় নিয়ে না বেরোলে গন্তব্যে পৌঁছনো বা কোথাও থেকে ফেরা মুশকিল হয়ে যাচ্ছে ক্রমশ।
৫. রান্নার তেল
রান্নার তেলের দাম গত কয়েক মাসে অনেকটাই বেড়েছে, আগামী দিনে আরও খানিকটা বাড়লেও আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। ভোজ্য তেলের বাজারের অনেকটাই আমদানির উপর নির্ভরশীল – ইন্দোনেশিয়া আর রাশিয়া-ইউক্রেন যথাক্রমে পাম অয়েল আর সূর্যমুখি তেলের জোগান দিত ভারতের বাজারে। আপাতত সে রাস্তাও বন্ধ।