এ কথা অস্বীকার করার কোনও উপায় নেই যে, অতিমারির ধাক্কায় একেবারে তলানিতে ঠেকেছিল সোনা-রুপোর বিক্রিবাটা। ১০ গ্রাম সোনার দাম বাড়তে বাড়তে প্রায় ৫০,০০০ ছুঁয়েছিল। তাই বিয়ের মরশুম শুরুর সময়েই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যখন ঘোষণা করলেন যে সোনা-রুপোর উপর কাস্টমস ডিউটি কমানো হল ৫%, তখন ক্রেতা-বিক্রেতা দুই তরফের মুখেই হাসি ফুটেছে।
শুল্ক কমলেও এগ্রিকালচার ইনফ্রাস্ট্রাকচার আর ডেভেলপমেন্ট সেস বসেছে এই মূল্যবান ধাতুর উপর, তার পরেও প্রতি গ্রাম সোনার দামে অন্তত ১২০-১২৫ টাকা ছাড় পাওয়া যাবে বলে আন্দাজ করছেন স্বর্ণশিল্পীরা। বিয়ের সোনা কেনার জন্য যাঁরা অন্তত লাখখানেক টাকা বরাদ্দ রেখেছিলেন, তাঁদের হাজার পাঁচেক টাকা বাঁচলেই বা মন্দ কী?
স্বর্ণব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরেই সোনার উপর লাগু হওয়া ১২.৫% শুল্কের বিরোধিতা করে আসছিলেন। ৫% শুল্ক কমানোর পর তার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭.৫%, তার উপর অবশ্য কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ হওয়া সেস দিতে হবে। কিন্তু তার পরেও যেটুকু রিলিফ পাওয়া গিয়েছে, তাতেই স্বস্তির শ্বাস ফেলেছেন তাঁরা।
অতিমারির পর স্বর্ণ শিল্প বিপুল ভাটার টান দেখেছে, একের পর এক দোকানের ঝাঁপ বন্ধ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ছোটো ব্যবসায়ীরা, তাঁদের অনেককে পেটের দায়ে পেশা বদলও করতে হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে নতুন, প্রতিভাবান কারিগররা এই পেশায় আসার উৎসাহই বা পাবেন কেন? এটা যেমন একটা দিক, তেমনই আর একটা সমস্যা হচ্ছে, আমদানি শুল্ক বেশি হওয়ায় বেশিরভাগ ব্যবসায়ী বেআইনি সোনা কেনেন কাঁচামাল হিসেবে। তাতে সরকারের ঘরে রাজস্ব জমা পড়ে না।
শুল্ক কমায় গয়নার সোনার বাজার তো চাঙ্গা হবেই, বিনিয়োগকারীর আস্থাও বাড়বে। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসখানেকের মধ্যে কোভিড পরিস্থিতি উন্নতির পাশাপাশি সোনার দামও খানিক পড়বে, উন্নত হবে বিক্রিবাটা।