দেখুন, এ বছর যারা ক্লাস টেন বা টুয়েলভের পরীক্ষায় বসছে, তাদের বিশেষ টিপস দিয়ে আর কোনও লাভ নেই – তাদের ভাগ্য মোটামুটি নির্ধারিত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু যারা সামনেরবার পরীক্ষায় বসবে, তারা এখন থেকেই সচেতন হলে পরিস্থিতি হয়তো কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
কারণ আপাতত কোভিড পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে, তাতে সামনের বছরেও পরীক্ষা আয়োজনের পরিস্থিতি থাকবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তৃতীয় ওয়েভ যদি আরও জোরালো হয়, ভাইরাসের মিউটেশন যদি টিকা আর শরীরে স্বাভাবিকভাবে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিকে হারিয়ে দিতে পারে, তা হলে পরীক্ষা না হওয়াই স্বাভাবিক। তার চাইতে বড়ো কথা হচ্ছে, টিকাকরণের আওতায় পরীক্ষার্থীদের না এনে এক জায়গায় জড়ো করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।
খুব সংক্ষেপে একবার দেখে নেওয়া যাক কোন বোর্ড কীভাবে ফলাফল তৈরির পরিকল্পনা করছে। এটাকেই সামনের বছরের গাইডলাইন হিসেবে ধরে এগোতে হবে। অনেকেই বলবেন, এটা মূল্যায়নের সঠিক পদ্ধতি হতে পারে না, বহু ছাত্রছাত্রী শেষ তিনমাস খুব মন দিয়ে লেখাপড়া করে ভালো রেজাল্ট করে ফাইনালে – তাঁদের সঙ্গে আমরাও একমত।
কিন্তু আজ আমরা যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি সেখানে বাস্তব একটাই – বোর্ড যেভাবে অ্যাসেস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটাকেই মেনে নিতে হবে। তাই ক্লাস নাইন থেকে উঠে-পড়ে লেগে পড়া উচিত। সমস্ত ছাত্রছাত্রীকে লেখা অভ্যেস করতে হবে বেশি করে – লকডাউনে সেই অভ্যেস ছেড়ে গিয়েছে নিশ্চিতভাবেই। প্রি বোর্ডের অনেক আগেই সিলেবাস শেষ করে লেখাপড়া চালাতে হবে, ডি-মোটিভেটেড হলে চলবে না।
সিবিএসই বোর্ড
ক্লাস টেন
ক্লাস টেনের পরীক্ষার্থীদের অ্যাসেসমেন্ট করবে স্কুল। এতদিন স্কুল ২০ নম্বরের অ্যাসেসমেন্ট পাঠাত বোর্ডের কাছে, এবার সারা বছরের ক্লাস ওয়ার্ক বা অ্যাসাইনমেন্টের উপর ধার্য হয়েছে ২০ নম্বর। এবার প্রতিটি ক্লাস টেস্টের নম্বর গুরুত্ব পাচ্ছে – ১০০ নম্বরের মধ্যে সারা বছরের ক্লাস টেস্টে প্রাপ্ত নম্বরের গড়ের ওয়েটেজ ১০। হাফ ইয়ার্লি বা মিড টার্মের জন্য বরাদ্দ ৩০ শতাংশ, প্রি বোর্ডের নম্বর ৪০%।
ক্লাস টুয়েলভ
৩০% বরাদ্দ হবে ক্লাস টেনের রেজাল্টের জন্য। ৩০% বরাদ্দ হবে ১১ ক্লাসের ফাইনাল পরীক্ষার ফলাফলের উপর। বাকি ৪০% প্রি বোর্ডের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে।
আইসিএসই বোর্ড
আইসিএসই বোর্ডের ক্ষেত্রেও মোটামুটি সিবিএসই-র নিয়মটাই মেনে চলা হবে। স্কুল সারা বছরের সমস্ত পরীক্ষা ও ক্লাস ওয়ার্কের উপর ভিত্তি করে ছাত্র/ছাত্রীর অ্যাসেসমেন্ট করে বোর্ডের কাছে পাঠাবে।
পশ্চিমবঙ্গ বোর্ড
মাধ্যমিক
নবম ও দশম শ্রেণির পরীক্ষার ফলের গড় করে স্কুল পাঠাবে বোর্ডে, তার ভিত্তিতে মাধ্যমিকের রেজাল্ট তৈরি করবে পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
উচ্চ মাধ্যমিক
মাধ্যমিক পরীক্ষায় যে চারটি বিষয়ে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়েছিল পরীক্ষার্থী, তার গড়ের জন্য বরাদ্দ ৪০% নম্বর। বাকি ৬০% দেওয়া হবে একাদশ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা ও ১২ ক্লাসের প্রজেক্ট ও প্র্যাকটিকালের উপর ভিত্তি করে।
টিপস
. একেবারে ক্লাস ওয়ার্ক স্তর থেকে সিরিয়াস হতে হবে। নিখুঁত ও পরিচ্ছিন্ন কাজ করে প্রতিটি প্রজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্ট ফাইল জমা দেওয়া দরকার।
. সব ক্লাস টেস্টকে গুরুত্ব দিতে হবে। পরীক্ষার আগে তিন মাসে ম্যানেজ দিয়ে দেবো মানসিকতা নিয়ে এগোলে ঠকতে হবে। পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের পরীক্ষায় অবশ্য ক্লাস টেস্টের গুরুত্ব আলাদা করে নেই। তবে স্কুলের সব পরীক্ষাই খুব সতর্ক হয়ে দেওয়া ভালো।
. হাফ ইয়ার্লি বা প্রি-বোর্ডকে বোর্ডের পরীক্ষার সমান গুরুত্ব দিতে হবে। এই নম্বরগুলি খুব জরুরি হয়ে দাঁড়াবে।