এক সপ্তাহ হয়ে গেল লকডাউন হচ্ছে, জীবন ফের থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছে। নানা মহলে কানাঘুষো চলছে, মে মাসের ৩০-এ গিয়ে মোটেই শেষ হবে না কড়াকড়ি, ফের তা বাড়াবে রাজ্য সরকার। জীবন আগে, না জীবিকা, তা নিয়ে দ্বন্দ্বে সাধারণ মানুষ জেরবার!
কিন্তু যার জন্য এত ঘটা করে লকডাউন করার দরকার পড়ল, সেই সংক্রমণ কি আদৌ কমল এতটুকু? আর কতদিন এভাবে ঘরের মধ্যে আটকে বসে থাকতে হবে? এ সব প্রশ্ন কি আপনার মাথাতেও ঘুরছে? উত্তর হল হ্যাঁ, এক বুক আশা নিয়ে বলা যায় যে রাজ্যে সংক্রমণের হার কমছে। গোটা দেশেও চিত্রটা একই – ধীরে ধীরে বশে আসছে সেকেন্ড ওয়েভ।
পাশাপাশি কিন্তু আরও একটা চিন্তার বিষয় আছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েই দিয়েছে যে, সংক্রমণ বা মৃত্যুর যে সংখ্যা গোটা বিশ্বে নথিবদ্ধ হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা আসলে তার চেয়ে অন্তত কয়েকগুণ বেশি। তাই এখনই হয়তো রোগ একেবারে কমে যাবে না, আশ-পাশের কারও না কারও আক্রান্ত হওয়ার খবর পেতেই থাকবেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান বলছে, বাংলায় বেশ কিছুদিন হল দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ২০ হাজারের আশেপাশে থাকত, পরশু থেকে তা ১৮ হাজারের নিচে নেমেছে। আশা করা হচ্ছে এই ট্রেন্ডটাই এখন চলবে এবং আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা খুব দ্রুত নামতে আরম্ভ করবে একটা সময়ে।
নিতি আয়োগের স্বাস্থ্য বিষয়ক দফতরের বক্তব্য হচ্ছে, প্রায় সব রাজ্যেই লকডাউন বা কড়া বিধিনিষেধ চলছে। মানুষ এক জায়গায় ভিড় জমাতে পারছে না। লোকাল ট্রেন, বাস বন্ধ। একান্ত দরকার ছাড়া বাড়ি থেকে বেরনোর উপায় নেই, তাই সংক্রমণ কমানো সম্ভব হয়েছে।
সেই সঙ্গে ১৮-৪৪ বছর বয়সি যে সব মানুষ কাজের সূত্রে সবচেয়ে বেশি বাইরে বেরোন এবং সুপার স্প্রেডার আখ্যা পান, তাঁদের টিকাকরণের কাজও হচ্ছে। যত তাড়াতাড়ি এই বয়সের মানুষ্কে টিকার আওতায় আনা যাবে, তত কমবে তৃতীয় ঢেউয়ের তীব্রতা।
এখনই স্বস্তির নিশ্বাস ফেলবেন না। ডাক্তারদের বক্তব্য হচ্ছে, দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ জনের নিচে নামলে তবেই বলা যাবে সেকেন্ড ওয়েভ নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আরও অন্তত মাসখানেক কড়া নিয়মকানুনের মধ্যে দিয়ে না গেলে তার ধারে-কাছেও যাওয়া সম্ভব নয়। সেই সঙ্গে চালিয়ে যেতে হবে মাস্ক পরা, বার বার হাত ধোওয়ার নিয়মকানুন।