সারা দুনিয়ার বহু মেয়েই শারীরিক নিগ্রহের শিকার হন, তা প্রকাশ্যে আসে না লোকলজ্জার ভয়ে। সেলেব্রিটিদের জীবনও এর চেয়ে খুব আলাদা হয় না। বিখ্যাত হলিউড অভিনেতা জনি ডেপ আর তাঁর স্ত্রী অ্যাম্বার হার্ডের তিক্ত ডিভোর্স হয়েছে কিছুদিন আগেই। কানাঘুষো ছিলই যে অ্যাম্বারকে বেধড়ক মারতেন জনি, সেই ভয়েই নাকি পৃথিবীবিখ্যাত মডেল-অভিনেত্রী বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই স্বামীর থেকে দূরে থাকতেন। তবে জনিও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে শারীরিক অত্যাচারের অভিযোগ এনেছিলেন।
২০১৮ সালে একটি ইংলিশ ট্যাবলয়েড জনি প্রসঙ্গে ব্যবহার করেছিল ‘ওয়াইফ বিটার’ শব্দবন্ধটি। তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন অভিনেতা। সম্প্রতি উচ্চ আদালতে হেরে গিয়েছেন তিনি, আদালত সমস্ত সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে স্ত্রীর উপর তিনি শারীরিক অত্যাচার করতেন। তাই মিডিয়ার দেওয়া তকমায় অসম্মানিত হওয়ার কিছু নেই।
আমাদের বক্তব্য, শারীরিক বা মানসিক কোনও অত্যাচারই মেনে নেওয়া উচিত নয়। এ কথা সত্যি যে অবস্থার চাপে সবাই সম্পর্ক চুকিয়ে বেরিয়ে আসতে পারেন না। কিন্তু তেমন হলেও মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করবেন না। অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। রইল কিছু পরামর্শ।
অত্যাচারের পরিমাণ কখনও কমে না
অনেক মেয়েই আরও অশান্তির ভয়ে মুখ বুজে অত্যাচার সহ্য করেন। কিন্তু এতে উলটোদিকের পুরুষটি সাহস পেয়ে যান। একই অপরাধ তিনি বারবার করতে থাকেন, ব্যাপারটা তাঁর অভ্যেসে পরিণত হয়। তাই চুপ করে থাকবেন না, নিজের আত্মসম্মান বজায় রাখুন। প্রতিবাদ করুন, অত্যাচার মাত্রা ছাড়ালে পুলিশকে জানাতে দ্বিধা করবেন না।
মানসিক অত্যাচারও কম নয়
শারীরিক অত্যাচার যতটা খারাপ, মানসিক অত্যাচার তার চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। ভয় দেখানো, জনসমক্ষে অপমানসূচক কথা বলা, স্বাধীন সত্তা নিয়ন্ত্রণ করতে চাওয়া, এ সবই মানসিক অত্যাচারের উদাহরণ। দিনের পর দিন এই পরিস্থিতির শিকার হলে মেয়েরা ক্রনিক ডিপ্রেশন, উদ্বেগ, অস্বস্তি, ভয়ের শিকার হয়ে পড়েন। তাঁদের মানসিক অস্তিত্বটাই টলমলে হয়ে যায়। এমনটা হতে দেবেন না, নিজের অধিকার আর সম্মান সম্পর্কে সচেতন থাকুন।
মনে রাখবেন আপনি একা নন
একা হয়ে যাওয়ার ভয়ে অনেক মেয়েই অত্যাচারী পার্টনারকে সহ্য করে সম্পর্কটায় থেকে যান। কিন্তু মনে রাখবেন, খেয়াল রাখা, যত্ন করার মতো মানুষ না থাকলেও আপনার জীবনে শান্তি রয়েছে। কাজেই আর সহ্য করবেন না, দরকারে অন্য আত্মীয় প্রতিবেশীদের সাহায্য নিন। পুলিশে যেতেও দ্বিধা করবেন না।
বিশ্বাস হারাবেন না
যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে অত্যাচারের শিকার, তাঁরা মানুষের উপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। কিন্তু তা করলে চলবে না। মনে রাখবেন সব মানুষ একরকম নয়। তাই মানুষের উপর থেকে আর নিজের উপর থেকে, দুটি ক্ষেত্রেই বিশ্বাস ধরে রাখুন।
একই সমস্যা কোনও পুরুষেরও হতে পারে
এমনটা ভেবে নেওয়ার কোনও কারণ নেই যে কেবল মেয়েরাই এই অত্যাচারের শিকার হন। পুরুষরাও ক্ষেত্র বিশেষে নানা সমস্যার মুখোমুখি হন। সেক্ষেত্রেও রুখে দাঁড়ানোটা জরুরি।
ফোটো: ইনস্টাগ্রাম