টাইম পত্রিকা এ বছর থেকেই আমেরিকার প্রতিভাবান শিশুদের মধ্যে থেকে একজনকে সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া শুরু করেছে, আর প্রথমবারেই সেই তালিকায় জ্বলজ্বল করছে ভারতীয় বংশোদ্ভূত কিশোরী গীতাঞ্জলি রাওয়ের নাম। বছর ১৫-র মেয়েটি গত বছরই জিতে নিয়েছিলেন আমেরিকার ‘টপ ইয়াং সায়েন্টিস্ট’ তকমা, এবার তাঁর টুপিতে যোগ হল আরও একটি পালক।
ক্লাস টু-থ্রিতে পড়ার সময় থেকেই মেধাবী ছাত্রীটি বিজ্ঞান আর প্রযুক্তি ব্যবহার করে সামাজিক পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখতেন। যখন গীতাঞ্জলি ক্লাস সেভেনে পড়েন, তখন মিশিগানের বাসিন্দারা জলে সীসার দূষণ নিয়ে মারাত্মক অসুবিধেয় পড়েছিলেন। খুব সহজে দূষণের মাত্রা নির্ণয় করার জন্য তিনি তখনই টেথিস নামক একটি যন্ত্র তৈরি করেন। সাইবারবুলিং ঝটপট ধরে ফেলার জন্য একটি অ্যাপ বানিয়েছেন, অন্য একটি আবিষ্কারের সাহায্যে ড্রাগ অ্যাডিকশন নির্ণয়ের উপায় বের হয়েছে।
বিজ্ঞান ছাড়াও আরও নানা বিষয়ে আগ্রহ আছে এই কিশোরীর। তিনি ভারতীর শাস্ত্রীয় সঙ্গীত আর নৃত্যের ছাত্রী। বাজাতে পারেন পিয়ানো। সাঁতার আর তলোয়ার চালনায় পারদর্শী। সেই সঙ্গে অবসরে বেকিং করতে ভালোবাসেন, নিজের তৈরি পাউরুটি নিয়ে গর্বও আছে!
টাইম পত্রিকার তরফে অ্যাঞ্জেলিনা জোলি গীতাঞ্জলির সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেখানেই কলোরাডোর ডেনভারের বাসিন্দা এই তরুণী বলেছেন, “টিভিতে বিজ্ঞানী বলতে যাঁদের চেহারা দেখতে আমরা অভ্যস্ত, তাঁরা প্রায় সবায় প্রায় মধ্যবয়সি এবং সাদা চামড়ার পুরুষ। আমায় যে একেবারেই তাঁদের কারও মতো দেখতে নয়, তা আমি বেশ জানি।”
বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর অঙ্ক নিয়ে নানা আলোচনাসভা আর সেমিনারে যোগ দেন এই তরুণী, তাঁকে দেখা গিয়েছে টেড টকের মঞ্চেও। তাঁর মনে হয়, সারা দুনিয়ায় অজস্র সমস্যা আছে, তার সব কিছু নিয়ে মাথা ঘামানোর দরকারই নেই! “এমন সমস্যা বেছে নিতে হবে যা আপনার আগ্রহ বাড়ায়, সমাধানে পৌঁছতে উৎসাহী করে তোলে। আমি যখন উত্তর পর্যন্ত পৌঁছতে পেরেছি, তখন সবাই পারবেন – এ নিয়ে আমার কোনও সন্দেহ নেই!”
বলেন, আমরা যে সব সুপারহিরোদের কথা কল্পনা করে নিয়েছি, তাঁরা সবাই মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করেন – যেখানে সমস্যা, হাজির হয়ে যান সেখানেই। “আমার মনে হয়, বিজ্ঞানীরা হচ্ছেন জীবন্ত সুপারহিরো। তাঁরা যেখানেই থাকুন না কেন, মানুষের বিপদের দিনে ঠিক হাজির হয়ে যান। আমিও তেমনই একজন সুপারহিরো বৈজ্ঞানিক হতে চাই, চাই মানুষকে রক্ষা করতে।”