একদা লিয়েন্ডার পেজ আর মহেশ ভূপতি প্রায় জাতীয় নায়কের মর্যাদা পেতেন। গত শতকের নয়ের দশকে যাঁরা বড়ো হয়েছেন, টেনিসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক না থাকলেও তাঁরা লিয়েন্ডার-মহেশকে নিশ্চয়ই চিনবেন।
ভারতকে বিশ্ব টেনিসের মানচিত্রে বলার মতো একটা উচ্চতায় তুলে নিয়ে গিয়েছেন এই দুই তারকা। তাঁদের ডাবলস জুটি পেশাদার সার্কিটে ত্রাস ছিল একটা সময়ে, অবিশ্বাস্য সব ম্যাচ জিতেছেন দুই তারকা। কিন্তু খুব তিক্তভাবে ভেঙে যায় তাঁদের বিখ্যাত জুটি।
নানা গুঞ্জন ছিল বাতাসে – লিয়েন্ডার তখন অভিনেত্রী মহিমা চৌধুরীকে ডেট করছেন। শোনা যায়, মহিমাকে নিয়েই নাকি ঝামেলার সূত্রপাত। পরে মহেশ অভিনেত্রী লারা দত্তকে বিয়ে করেন, লিয়েন্ডারের ব্যক্তিগত জীবন এখনও রহস্যে মোড়া ও বিতর্কিত, তবে কন্যার প্রতি তিনি নিবেদিতপ্রাণ — তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
দিন দুই আগে, লি-হেশ নামে খ্যাত এই জুটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোষণা করেন যে তাঁরা আবার একসঙ্গে ফেরার পরিকল্পনা করছেন – স্বাভাবিকভাবেই, আলোড়ন পড়ে যায় ভক্ত সমাজে। একদা সারা দেশের টেনিস মাথারা এক হয়েও লি-হেশ-এর ভাঙন ঠেকাতে পারেননি। নিজেদের কেরিয়ারকে জলাঞ্জলি দিয়েও তাঁরা মুখ ফিরিয়ে থেকেছেন, অন্য পার্টনার খুঁজে ব্যর্থ হয়েছেন, তবে কোনও প্রলোভনেই একসঙ্গে কাজে ফেরেননি। আচমকা কী এমন হল যে এ হেন সিদ্ধান্ত বদল?
তার পর জানা গিয়েছে যে, নতুন একটি ওয়েব সিরিজের জন্য তাঁরা হাত মিলিয়েছেন একে অন্যের সঙ্গে। কীভাবে সাধারণ পরিবারে জন্মে তাঁরা তারকা হয়ে উঠলেন একদিন, সেই গল্পই শোনা যাবে। সত্যি বলতে কী, কলকাতার ছেলে লিয়েন্ডারের আন্তর্জাতিক মঞ্চে সফল হওয়াটা রূপকথার চেয়ে কম নয়! তাঁর অলিম্পিক হকি তারকা বাবা ভেস পেজ মিলিটারি শাসনে বড়ো করেছেন ছেলেকে, অতি কষ্টে মান-সম্মানের তোয়াক্কা না করে প্রতিভাবান ছেলের জন্য জোগাড় করেছেন কর্পোরেট স্পনসরশিপ।
১৯৯৪ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত টানা খেলেছেন লি-হেশ, ১৯৯৯ সালে জিতেছেন উইম্বলডন ডাবলস। তার পর একবার বিচ্ছেদ হয় তাঁদের। ফের ২০০৮-২০১১ পর্যন্ত জোড়াতালি দিয়ে টিকে ছিল পার্টনারশিপ, শোনা যায়, এই সময়ে তাঁরা একে-অপরের সঙ্গে কথাও বলতেন না। তার পর অবশ্য আর কখনও সামাজিকভাবেও মুখোমুখি হননি।
চিত্রনির্মাতা দম্পতি নিতেশ তিওয়ারি (‘দঙ্গল’ খ্যাত) ও অশ্বিনী আইয়ার তিওয়ারি (‘বরেলি কি বরফি’, ‘পাঙ্গা’ খ্যাত) এই সিরিজটি তৈরি করবেন। স্বাভাবিকভাবেই দর্শকরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন তাঁদের প্রত্যাবর্তনের।