হ্যাঁ, সাম্প্রতিক এক গবেষণায় প্রকাশিত হয়েছে, যাঁরা নিয়মিত বাস-ট্রেন বা মেট্রোর মতো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে আর পাঁচজনের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে চলাফেরা করছেন এবং সমস্ত সাবধানতা মেনে চলছেন, তাঁদের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কম। বিশেষ করে যাঁদের একবার অসুখ হয়ে গিয়েছে, তাঁরা যদি মাস্ক পরেন, হাত ধুয়ে নেন বারবার, তা হলে চিন্তা করতে হবে না।
ঠিক কোন কোন কারণে বিজ্ঞানীরা এমন সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন জানতে চান? হায়দরাবাদের একটি সংস্থা ভারতের ২৪টি শহরের প্রায় হাজার এগারো মানুষের মধ্যে একটি অভিনব গবেষণা। চালিয়েছিল। তার ভিত্তিতেই তারা কয়েকটি ব্যাপারে নিঃসন্দেহ হয়েছে।
দেখা গিয়েছে, যাঁরা রোজ পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করে কাজে যান বা অনেক মানুষের সঙ্গে একসঙ্গে বসে কাজ করেন, তাঁদের শরীরে ভাইরাসের সঙ্গে টক্কর দেওয়ার উপযোগী সেরোপজিটিভিটি তৈরি হয়েছে। কারণ? মূল কারণ এই জনগোষ্ঠীর একটা বড়ো অংশই প্রথম দফায় সংক্রমিত হয়েছেন, বাকিদের মধ্যে গড়ে উঠেছে ইমিউনিটি। ফলে এঁরা যদি সব নিয়ম মেনে চলেন, তা হলে কোভিড মারাত্মকভাবে কাবু করতে পারবে না।
যাঁরা কোভিড পরবর্তী সময়ে নিজেদের স্যানিটাইজ করা গাড়ি ছাড়া অন্য কোনও যানবাহন ব্যবহার করেননি, সেই ধরনের মানুষের মধ্যে সেরোপজিটিভিটির মাত্রা ৯%। কারণ তাঁরা সংক্রমিতের সংস্পর্শেই আসেননি। ফলে এঁদের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বেশি, রি-ইনফেকশনের ক্ষেত্রেও এঁরাই এগিয়ে আছেন।
কিন্তু যাঁরা বাইরে বেরোচ্ছেন, বহু মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ হচ্ছে বা কাজ করছেন – তাঁদের সেরোপজিটিভিটি অনেক বেশি – অন্তত ১৬%। এঁরা জানেন যে পেটের দায়ে সোশাল ডিসট্যান্সিং মানা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে এঁরা বাকি সমস্ত নিয়ম মেনে চলার ব্যাপারে অনেক বেশি সিরিয়াস। সব মিলিয়ে এঁদের মধ্যে সংক্রমণ ফিরে আসার সংখ্যাও কম।
সেই সঙ্গে দেখা গিয়েছে যে যাঁদের ব্লাড গ্রুপ এবি, সংক্রমণের হার তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। তার পরেই আসবে বি গ্রুপ। ও আর এ গ্রুপের রক্তের অধিকারীদের মধ্যে করোনা ছড়িয়েছে সবচেয়ে কম।
তবে মনে রাখতে হবে যে করোনা ভাইরাস রোগটাই খুব নতুন। তা নিয়ে নানা গবেষণা হচ্ছে বটে, কিন্তু শেষ সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর মতো অবস্থা এখনও আসেনি। এই রিসার্চ নতুন চিন্তার একটা রাস্তা দেখিয়েছে মাত্র – তা ধ্রুব সত্যি বলে ধরে নেবেন না।