সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্য বলছে এ রাজ্যে দৈনিক কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত হাজারের নিচেই থাকছে। তবে কোন জেলায় ঠিক কত রোগী আছেন, তা জানার জন্য রাজ্য সরকার কিছুদিন আগে একটি বিশেষ সমীক্ষা করেছে। তাতেই ধরা পড়েছে, পশ্চিমবঙ্গের তিনটি জেলায় কোভিড সংক্রমণের হার সবচাইতে বেশি। সেগুলি হল পূর্ব মেদিনীপুর, জলপাইগুড়ি ও দার্জিলিং।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে এই ‘সেন্টিনেল সার্ভিলিয়েন্স’ করা হয় এবং সরকারি হাসপাতালে যে সব রোগীর কোনও কোভিড উপসর্গ নেই, তাঁদের পরীক্ষা করা হয়েছিল। জুলাইয়ে প্রথম দফার সার্ভিলিয়েন্সের পর দেখা যায়, রাজ্যের ১৫টি জেলায় সংক্রমণের পজিটিভিটি রেট ১ শতাংশের নিচে।
পূর্ব মেদিনীপুর ও নদীয়ায় এই রেট ৩ শতাংশের বেশি। অর্থাৎ, ১০০ জনকে পরীক্ষা করলে ৩ জন এমন মানুষের সন্ধান মিলছে, যাঁরা কোভিড পজিটিভ – কিন্তু শরীরে কোনও লক্ষণ নেই। সবচাইতে খারাপ ফল করে দার্জিলিং জেলা, সেখানে কোভিড পজিটিভিটি রেট হয় ৬.৭৫ শতাংশ। বাকি সব জেলাতেই ১-৩ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে পজিটিভিটি রেট।
আগস্টে এই সার্ভিলিয়েন্সের দ্বিতীয় দফায় দেখা যায়, ১৮টি জেলায় সংক্রমণ হার ১-এর নিচে। তার মধ্যে কলকাতা আছে। তিনের ঘরে ও সামান্য উপরে রয়েছে চারটি জেলা। সব চাইতে খারাপ ফল এবারও দার্জিলিংয়ের – ৭.৭ শতাংশ। তার পরেই আছে জলপাইগুড়ি (৬.০) ও পূর্ব মেদিনীপুর (৫.৯)।
আশঙ্কার কারণ হচ্ছে, এই তিনটিই জেলাতেই পর্যটকের আনাগোনা আছে। পুজোর সময়ে এখানে বেড়াতে যাওয়ার প্ল্যান করছেন অনেকে – অন্যান্য বছরের মতোই। কিন্তু ঠান্ডা মাথায় ভেবে দেখুন একবার, এখন বেড়াতে বেরিয়ে পড়লে কিন্তু বড়ো বিপদ হতে পারে।
দার্জিলিং জেলায় প্রতি ১০০ জনের মধ্যে এমন ৮জন মানুষ আছেন যাঁদের শরীরে কোভিডের কোনও লক্ষণ নেই। এঁরা ঘুরছেন, সর্বত্র যাওয়া-আসা করছেন, আর রোগ ছড়াচ্ছেন নিজেদের অজান্তে। থার্ড ওয়েভ অক্টোবরে তুঙ্গে পৌঁছনোর কথা। তার মধ্যে যদি সংক্রমণের হার কমানো না যায়, তা হলে মুশকিল। সেই সঙ্গে পর্যটকের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতেও হবে, তা না হলে এগুলি হটস্পট হয়ে উঠতে বেশি সময় নেবে না।
তার চেয়েও বড়ো কথা, এই সব ছোটো জেলায় সংক্রমণ বাড়লে খুব সমস্যা হবে – কোথাওই চিকিৎসা ব্যবস্থা খুব উন্নত নয়। রোগীর চাপ সামলানো মুশকিল হয়ে পড়তে পারে।