সারা দেশ জুড়ে কোভিড পরিস্থিতি মোটামুটি স্থিতিশীল, এ রাজ্যে তো সংক্রমণের হার নামছেই। এই অবস্থায় আশা করা হয়ছিল যে লকডাউন হয়তো তুলে নেওয়া হবে। কিন্তু ৩০ জুলাই পর্যন্ত তা হচ্ছে না, কিছু ক্ষেত্রে ছাড় মিললেও বিধিনিষেধ বজায় থাকছেই – নবান্ন থেকে আজই জারি হয়েছে নয়া ঘোষণা।
. রাত ৯টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জারি থাকছে লকডাউন – এই সময়ে স্বাস্থ্য বা ইমার্জেন্সি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ছাড়া কেউ বাইরে বেরোলে যথেষ্ট কারণ দেখাতে হবে।
. বাইরে বেরোলে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। সেই সঙ্গে বজায় রাখতে হবে সামাজিক দূরত্ববিধি, মেনে চলতে হবে কোভিড প্রটোকল।
. এখনও লোকাল ট্রেন চালু হচ্ছে না। স্পেশাল ট্রেনের পাশাপাশি সপ্তাহের কাজের দিনে ৫০% যাত্রীসহ মেট্রো চলবে। তবে মেট্রোর স্যানিটাইজেশন করতে হবে ঠিকমতো।
. সমস্ত বাজার-দোকান খোলা রাখা যাবে আগের মতোই – স্বাভাবিক কাজের সময়ে ফিরে যাওয়ার ছাড়পত্র মিলেছে।
. সরকারি, বেসরকারি অফিসেও বহাল থাকবে স্বাভাবিক ‘ওয়ার্কিং আওয়ার’, হাজির থাকতে পারবেন ৫০% কর্মী। তবে ব্যাঙ্ক খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত।
. চলবে মিটার ট্যাক্সি, অ্যাপ ক্যাব, সরকারি-বেসরকারি বাস, অটো। আন্তঃ জেলা বাস, ফেরি পরিষেবাও চালু হবে। তবে সর্বত্রই মোট ধারণক্ষমতার ৫০% যাত্রী পরিবহন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরিবহন কর্মীদের ভ্যাকসিনেশন আবশ্যক, সমস্ত যাত্রীদের কোভিড বিধি মানতেই হবে। কোম্পানি বা কর্তৃপক্ষকে স্যানিটাইজেশনের ভার নিতে হবে, কর্মীর কাজ সামাজিক দূরত্ববিধি বজায় রাখা।
. খেলাধুলো শুরুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তবে ক্লাব বা স্টেডিয়াম থাকবে দর্শকশূন্য।
. সিনেমা বা টিভি প্রোগ্রামের শ্যুটিং চলতে পারে, তবে সমস্ত কলাকুশলীর ভ্যাকসিনেশন মাস্ট, আর ৫০ জনের বেশি সেটে উপস্থিত থাকা যাবে না। গানের রেকর্ডিংয়ের ক্ষেত্রে থাকতে পারেন ১০ জন সদস্য।
. শপিং মল বা মার্কেট কমপ্লেক্স খোলা থাকবে পুরো সময়, কর্মীদের ৫০% হাজির থাকতে পারেন। দোকানে ভিড় করতে দেওয়া যাবে না।
. সালোন বা পার্লার খোলা থাকবে পুরো সময়ের জন্য। স্যানিটাইজেশন মাস্ট, কর্মী ও গ্রাহক দু’ পক্ষকেই ভ্যাকসিনেশন সম্পূর্ণ করতে হবে।
. পেশাদার সাঁতারুরা সুইমিং পুলে প্র্যাকটিস শুরু করতে পারেন, তবে সমস্ত বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে।
. জিমে সকাল ও বিকেলের স্লটে যতজন ধরে তার ৫০% গ্রাহক হাজির থাকতে পারবেন। কর্মী ও গ্রাহককে ভ্যাকসিনেটেড হতে হবে।
. খোলা থাকবে রেস্টুরেন্ট, বার, ক্লাব – তবে সিটিং ক্যাপাসিটির ৫০% হাজির থাকতে পারবেন।
. বিয়েবাড়িতে অতিথির ঊর্ধ্বসীমা ৫০, শ্রাদ্ধবাড়িতে ২০।
সরকারের বক্তব্য হচ্ছে, এখনও পর্যন্ত বিধিনিষেধ তুলে নেওয়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়নি। বিশেষত মুখ্যমন্ত্রীর ধারণা, লোকাল ট্রেন চালু করলেই সংক্রমণ মাত্রাছাড়া বাড়বে। তা ছাড়া টিকার অভাব ঘোচেনি এখনও, রোজ লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছনোই সম্ভব হচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে সব স্বাভাবিক হলেই তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়ার আশঙ্কা আরও বাড়বে।
সরকারি তরফে বিধিনিষেধের পাশাপাশি নাগরিকদের সচেতন হয়ে নিজের দায়িত্ব পালন করতে হবে। একমাত্র তা হলেই কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।