আপাতত স্কুলে ডাকা হচ্ছে স্রেফ নবম-দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের, ক্লাস শুরু হবে সরস্বতী পুজোর কয়েকদিন আগে থেকে। সিবিএসই ও আইসিএসই বোর্ড পরিচালিত স্কুলগুলির বার্ষিক পরীক্ষা এখনও হয়নি, নাইন আর ইলেভনের অ্যানুয়াল পরীক্ষাও সম্ভবত স্কুলেই হবে — এই পর্যন্ত খবর মোটামুটি সব অভিভাবকের কাছেই আছে।
সেই সঙ্গে আছে আশঙ্কা ও আতঙ্ক। ফ্রান্স আর ইংল্যান্ডে স্কুল খুলেছিল, তার পরেই দাপিয়ে বেড়াতে আরম্ভ করে ব্রিটেন স্ট্রেনের ভাইরাস, শয়ে শয়ে শিশু আক্রান্ত হয়। ইংল্যান্ডে একটা সময়ে বাচ্চাদের হাসপাতালে জায়গা দেওয়া যাচ্ছিল না। সেকেন্ড ওয়েভের রেশ এখনও পুরোপুরি কাটেনি সেখানে। এই সব মাথায় রেখেই এ দেশে স্কুল খুলতে চলেছে। এখানে আপাতত রোগ নিয়ন্ত্রণে এসেছে, ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে জীবন। তাই বড়ো ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের স্কুলে আনার ব্যবস্থা হচ্ছে, চালু থাকবে অনলাইন ক্লাসও।
অভিভাবকরা নিশ্চিতভাবেই দোলাচলতায় ভুগছেন। কিশোর-কিশোরীরা স্কুলে গেলে, বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ পেলে মানসিকভাবে ভালো থাকবে, এ কথা ঠিক। কিন্তু কার থেকে যে রোগ বয়ে আনবে বাড়িতে, তার ঠিক নেই। বহু স্কুল ছাত্র যাতায়াত করে স্কুল বাসে বা পুল কারে। আগে এই গাড়িগুলি ভিড়ে ঠাসা থাকত, এখন কী হবে? এই পরিস্থিতিতে সরকারি নির্দেশিকা মানা একান্ত জরুরি।
. সন্তানের সঙ্গে কথা বলুন, তাকে নিউ নরমালের নিয়মবিধি বোঝান। ইচ্ছে হলেও বন্ধুবান্ধবের গলা জড়িয়ে আড্ডা, জলের বোতল বা টিফিন শেয়ার করা যাবে না। এটাই সরকারি নিয়ম, স্কুল তা কঠোরভাবে মানবে। আপনার ছেলে বা মেয়ে না মানলে তাকে শাস্তি পেতে হবে হয়তো, বা ফের অনলাইন ক্লাস করতে হবে।
. আপাতত খেলাধুলো বন্ধ, বিশেষ করে ক্রিকেট, ফুটবল, ভলিবলের মতো খেলাধুলো। স্কুল যদি সব দিক বিচার করে কোনও গেমস ক্লাস শুরু করে, তা হলে অবশ্য আলাদা ব্যাপার।
. স্কুলের ভিতর থাকাকালীন মাস্ক পরেই থাকতে হবে, কারও অসুবিধে থাকলে আগেই জানান। সেক্ষেত্রে আপনার সন্তানকে অফলাইন ক্লাস করতে দেওয়া হবে না। কিন্তু কোনও অভিভাবক বাচ্চাকে আনতে গেলে তাঁকেও মাস্ক পরতে হবে। মাস্ক ছাড়া একটা মুহূর্তও চলবে না।
. দূরত্ব বিধি মেনে চলতে হবে সর্বক্ষণ। কারও বই, খাতা, পেন ইত্যাদি শেয়ার করা যাবে না। অভিভাবকরা স্কুলের গেটে ভিড় জমাবেন না। নিজস্ব স্যানিটাইজার রাখা উচিত কাছে। সেই সঙ্গে বার বার হাত ধুতে হবে।
. জ্বর বা সর্দিকাশি হলে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাবেন না অন্তত সাতদিন। অনেক অভিভাবক পরীক্ষা আছে বলে বাচ্চাকে স্কুলে পাঠান অসুস্থ অবস্থাতেও, এখন তেমন করলে কিন্তু আপনি নিজের সন্তানের পাশাপাশি অন্যের জীবন বিপন্ন করবেন।
. স্কুল ছুটির পর বাচ্চা যেন সরাসরি বাড়ি যায়। জামাকাপড় প্রতিদিন কেচে দিন। জুতো পরিষ্কার করা একান্ত আবশ্যক।
. পুল কার বা স্কুল বাস স্যানিটাইজ করা হচ্ছে কিনা খোঁজ রাখুন। সেই সঙ্গে স্কুলের ভিতর ঠিকভাবে স্যানিটাইজ করা হচ্ছে কিনা এবং বাথরুম পরিষ্কার আছে কিনা সেটাও জেনে নিতে হবে।