এখনও আমাদের দেশে কোভিড নিয়ন্ত্রণে আসেনি পুরোপুরি, কেরালায় এখনও আক্রান্তের সংখ্যা কপালে ভাঁজ ফেলার মতো বেশি, উত্তর-পূর্বের কয়েটি রাজ্যেও সংক্রমণের হার বেশ বেশির দিকেই। সেই সঙ্গে তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা তো আছেই।
তার মধ্যেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান বিজ্ঞানী ডা. সৌম্যা স্বামীনাথন বলেছেন, এ দেশে সম্ভবত কোভিডের শেষের শুরু হয়ে দিয়েছে – রোগটা থাকবে আগামী দিনেও, তবে তা দাঁত-নখ বের করতে পারবে না দ্বিতীয় ওয়েভের মতো।
. খেয়াল করবেন, এখানে ‘সম্ভবত’ কথাটা খুব জরুরি। ডা. স্বামীনাথন যা বলেছেন, সেটাও আন্দাজ। করোনা ভাইরাস যে আবার প্রবল প্রতাপে ফিরবে না, তার কোনও গ্যারান্টি তাঁর কাছেও নেই। উলটে এ কথাও বলেছেন যে ডেল্টার মতো অন্য কোনও ভ্যারিয়ান্ট উঠে আসছে কিনা সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কারণ ভ্যারিয়ান্টের দাপটেই কিন্তু সেকেন্ড ওয়েভ মারাত্মক আকার নিয়েছিল।
. তৃতীয় ওয়েভ যে শিশুদের উপরেই আছড়ে পড়বে এ কথাটা একেবারে আন্দাজ থেকেই বলা হচ্ছে। সাবধান হওয়া ভালো, তবে আতঙ্কিত হয়ে লাভ নেই একেবারেই। বাচ্চাদের ঘরে বন্ধ করে রাখলে কিন্তু তাদের মনের উপর চাপ পড়তে পারে।
. রোগটা কিন্তু থাকবেই, অতিমারির ভয়ঙ্করতা না থাকলেও মহামারি হিসবে কোভিড রয়েই যাবে। সব সময়ে সাবধান থাকতে হবে। মাস্ক ব্যবহার, হাত ধোওয়া, স্যানিটাইজারের ব্যবহার, ভিড় এড়িয়ে চলা, সামাজিক দূরত্ববিধি মানা, জ্বর-জারি হলে ঘরের বাইরে না বেরনোর মতো বেসিক নিয়মগুলো মেনে চলতেই হবে। সেই সঙ্গে টিকা নিয়ে ফেলুন, বুস্টার ডোজ চালু হলে সেটাও নিতে হবে।
. উৎসবের মরশুমে বাইরে বেরনোর সময়ে বাড়তি সতর্কতা মেনে চলতে হবে। তার কারণ কেরালায় ‘ওনাম’ হওয়ার পর গত কয়েকদিনে সংক্রমণের সংখ্যা বেড়েছে। সামনেই গণেশ চতুর্থী, তার পরেই আছে দুর্গাপুজো। তৃতীয় ওয়েভ শুরু না হলে মানুষ বেড়াতেও যাবে মন খুলে। সব মিলিয়ে রোগ ফের বাড়তে পারে।
. ডা. স্বামীনাথনের ধারণা, ২০২২-এর মধ্যেই ভ্যাকসিনের আওতায় এসে যাবেন গোটা পৃথিবীর ৭০% মানুষ। তার পর কোভিড আর সেই অর্থে বিপর্যয়ের কারণ হয়ে উঠতে পারবে না – ধীরে ধীরে স্বাভাবিকের দিকে ফিরতে শুরু করবে দেশগুলি।
. মাঝে মাঝে কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কাও থাকছে। তখন হয়তো স্থানীয় প্রশাসন লকডাউনের মতো ব্যবস্থা নিতে পারে।